. এক কোনে পড়ে আজ বিষণ্ণ অথচ রাশভারী,
উঁচু মাথা দেহ ঋজু পুরনো কাঠের আলমারী।
কৌলীন্য যদিও গেছে বুকে আছে স্মৃতির আকর,
সময় বদলে গেছে বদলেছে পুরনো সে ঘর।
তামাদি দিনের স্রোত বয়ে চলে আলমারীময়,
প্রতিটি তাকের ফাঁকে গল্পেরা কত কথা কয়।
এক তাকে সাদা কালো কবেকার ছবির এ্যালবাম,
সাথে মিলে মিশে আছে পুরনো চিঠির কিছু খাম।
বহুযুগ আগেকার ডাইরিরা থাকে এক তাকে,
হারানো দিনের যত ঘটনারা বেঁচে তার ফাঁকে।
মাঝ-তাকে ভাসে যেন বাবার নস্যির সেই ঝাঁজ,
সারদা মায়ের ছবি টার্কিশ রুমালের ভাঁজ।
পুরু ফ্রেম চশমাটা আর জেলুসিলের বয়ম,
খুচরো পয়সা কিছু, চন্দন কাঠের কলম।
উপরের তাক জুড়ে দরকারি কাগজের তাড়া,
দেনা পাওনার কথা, দুঃখ কষ্টের মাসোহারা।
নীচের দুখানা তাক, তুলে রাখা বিছানার স্থান,
পিতলের হাঁড়ি কুড়ি, কোষা-কুশি পূজার আঘ্রাণ।
ন্যাপথালিনের বাস আনত অকালে শীত ঘুম,
ডিঙ্গি মেরে তাক ঘাঁটা যখন দুপুর নিঃঝুম।
কোথাও মায়ের গন্ধ কোথাও বাবার ছিল ঘ্রাণ,
রহস্যেতে ভরা ছিল, ছিল আলমারীটার প্রাণ।
সবার আপন, ছিল সবার মনের খুব কাছে,
বাবার হাতের ছোঁয়া, স্নেহের পরশ প্রতি খাঁজে।
ভালবাসা বদলেছে, বদলেছে সবার ঠিকানা,
স্মৃতির আবেশ বুকে টিকে আছে আলমারীখানা।