ভ্রূণ হত্যা করতে চায়নি কিশোরী যুবতী,
সে জানতো সমাজ মেনে নেবে না,
তার পরিচয় হীন সন্তানকে।
তবুও জন্ম দিল, সমাজের আড়ালে।
এখন সেই শিশুটি ফুটপাতে বড় হয়।
রাতের অন্ধকারে ব্রিজের নীচে
জন্মাল আরেকটি শিশু।
চতুর্থ সন্তানের জন্ম দিল আয়েশা,
প্রতিটি শিশুই ছিল কন্যা সন্তান।
এরা সবাই এখন কোন না কোন
ফুটপাতের ধারে অথবা কোন বস্তিতে
অযত্নে অবহেলায় বেড়ে ওঠে।
উৎসব আসে, উৎসব যায়
এদের মনে কোন রং লাগে না।
উৎসবের আনন্দ রাস্তার ধারে বসে
শুধু দেখে আর ফ্যাল ফ্যাল করে
চেয়ে থাকে ছোট ছোট শিশু গুলোর দিকে।
যারা নতুন পোশাক পরে
বাবা মায়ের হাত ধরে ঘোরে
এক প্যান্ডেল থেকে অন্য প্যান্ডেলে ।
পুজো আসে পুজো যায় পুজো যায়
এদের মনে শুধু জেগে থাক এই হতাশা।।
তোমার দুর্গা নতুন সাজে লক্ষ টাকার প্যান্ডেল মাঝে,
পথের দূর্গা ফুটপাতে খিলখিলিয়ে হাসে।
তোমার দুর্গার নতুন জামা নতুন গয়না পরা
পথের দুর্গা নাম না জানা গায়ে ছেড়া জামা।
পথের দূর্গা পথে প্রান্তে ভিক্ষা করে ফেরে
তোমার দুর্গার প্যান্ডেলে লক্ষ্ টাকার খেলা,
চারিদিকে শুধুই লক্ষ টাকার মেলা।
দুদিন পরে ভাঙবে প্যান্ডেল টাকা যাবে জলে
পথের দুর্গা আশ্রয় নেয় কোন ভাঙ্গা ব্রিজের তলে।
তোমার দুর্গা হেটে চলে পায়েতে নতুন জুতো
পথের দুর্গা ফুটপাতে খায় জুতোর গুতো।
তোমার দুর্গা সিনেমা দেখে যায় ডিসকোথেকে,
আমার পথের দুর্গা ফুটপাতে অ আ শেখে।
পথের দূর্গা ধর্ষিত হয় রাতের অন্ধকারে।
পথের দূর্গা বঞ্চিত হয় সকল কাজ থেকে,
পথের দুর্গার কাটা মুণ্ড পড়ে থাকে ভাগাড়ে।
পথের দুর্গা মিছিলে হাঁটে, হাঁটে প্রতীবাদে।
তবু আমার দুর্গা বেঁচে থাকে অন্নহীন পেটে।
পথের দুর্গা ফুটপাতে উলঙ্গ হয়ে ছোটে।
পথের দুর্গার কপালে শুধুই কলঙ্ক রটে।
তবুও আমার দুর্গারা সব দশ হাত নিয়ে বাঁচে,
পথের দুর্গা পুজানীয় তাই আমার কাছে।।