দিনগুলো ছেঁড়া চপ্পলে পা গলিয়ে একা একা হেঁটে চলে গেল I
বিবর্ণ দুপুরে সুখী কুকুর নরম রোদে শরীর এলিয়ে দেয় I
ফটোফ্রেমে অস্পষ্ট বাবার মুখ, চিঠি লিখবো বলেছিলাম মাকে
চেয়ে দেখেছি-ডাকপিওন ধুলো রাস্তা দিয়ে ফিরবে না কোনোদিনই I
সমস্ত জীবনে পরগাছার মতো আঁকড়ে ধরেছে ভয় I
বিয়ের সাজে শ্যামলা মেয়েটিকে শশুরবাড়ি যেতে দেখলে ভাবি 'সুখে থাকবে তো'?
লক্ষ করি খুব সন্তর্পনে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে পরিবারিক জীবন I
রান্নাঘরে পায়েসের গন্ধ বাতাস ভরিয়ে দেয়, প্রিয় জন্মদিন,
জানি তোমার সঙ্গে দেখা হবে না আর I
বাগ্দীবৌয়ের শখের শাক-সবজি বাগানে সন্ধ্যা নেমে এলে
রিপু করা জামা পড়ে ছেলেবেলা সামনে এসে দাঁড়ায়,
মায়ের সোনার চুরি বন্দক রেখে আমার আঠারোকে কলেজে যেতে দেখি
অগোছালো পড়ার টেবিলে আঁকিবুকি কাটে ছোট বোন
মনে পড়ে, নিরুদ্দিষ্ট যৌবন কালবৈশাখী হয়ে আছড়ে পড়েছিল ভাঙা ঘরের চালে I
আমি লিখেছিলাম বৃষ্টি ভেজা মাঠে দলছুট ছেলেটার কথা, আর
সেই মেয়েটির কথা, যাকে কোনোদিন বলা হবে না 'ভালোবেসেছিলাম তোমাকে' I
এসবের থেকে দূরে, আরও দূরে চলে যেতে যেতে, নিঃসঙ্গতার উপস্থিতি টের পায় রক্তে I
মনে পড়ে, কোনোকালে বেনে পুকুরে ভেসে উঠেছিল ঠিক আমারই মতো একটা মৃতদেহ
শিউরে উঠি, দেখি সিগেরেটের ছাই পলেস্তারা খসা দেওয়াল ফাটিয়ে হাসছে I
জানি অধিকাংশ ভালোবাসা আম কুড়োতে গিয়ে আর ফেরে না,
বুঝতে পারি কবিতারাও একদিন আমাকে একা ফেলে চলে যাবে I