স্মৃতি যেন শিখা চিরন্তন
জ্বলছে নিরন্তর।
কখনো স্মৃতি মনঘরে গোপন জোনাকি হয়ে
সমস্ত রাত পুড়ায় পিলসুজে তেল।
আবার কখনো স্মৃতি বিলকুল গায়েব
রৌদ্রতাপে শিশির যেমন।
২.
স্মৃতি সে কী মনপাখি ?
কেন উড়ে পলকে দূর থেকে বহুদূরে-
যেখানে নীলসমুদ্র, সোনার বালিয়াড়ি, বর্ণীল নুড়ি,
ঢেউ ভাঙ্গা ঢেউয়ে মৎসের স্বাধীনতা।
আহা !
একদিন মনে হত সমুদ্র দেখা ছাড়া আর কোন বিষয় নেই।
৩.
স্মৃতি তো রবিঠাকুরের সোনার খাঁচার রঙবেরঙয়ের দিন।
মনে পড়ে মায়াভরা সবুজ পাহাড়,
বিখ্যাত ভঙ্গীতে দাঁড়ানো উন্নত শিরের মতো
হিলটপে রাড়ারের চুড়ো
পীচ ঢালা পথ, দুপাশে গাছপালা, সবুজ তৃণ
আমরা কজন সতীর্থ নিত্য নিসর্গ ছুঁয়ে
আকাশে উড়াতাম মেঘের ধোঁয়া।
কাছাকাছি একটি বাঁদরহলার গাছ
অবাক হয়ে দেখত আমাদের ছেলেমি সামাজ।
৪.
কতো মনে পড়ে পাবলিক লাইব্রেরী চত্বরে
একটি বাঁধানো চক্রবাক।
এখানে রচিত হলো আমাদের যৌবন।
প্রলেতারিয়েত শ্রমজীবী মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা
আমরা কতিপয় তরুণ হাতে আদর্শের পোষ্টার
অথচ কিছুই হলনা।
কেবল প্রাচীন নক্ষত্রের ন্যায় হারিয়ে গেল চক্রবাক।
৫.
প্রধান সড়ক পার হলে ও পাশে নূর হোটেল।
চায়ের তুখোড় আড্ডায় স্বৈর সরকারের
পতনের দিন গুনে রাতদুপুরে ঘরে ফিরতে ফিরতে
দারুন ভয়ের মত ভেসে উঠত
প্রতীক্ষায় উৎকণ্ঠিত জনকের বিষণ্ণ মুখ।
মাঝে মাঝে মায়ের স্নেহের মত বারবার ফিরে আসে
সহোদরার অকাল মৃত্যু।
সবি যেন একটি স্মৃতিনদী নিঃশব্দ বহমান।
----------------------------
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১ খৃঃ
শারজাহ, ইঊ এ ই ।