শামিম বলছিল- সত্যি কথা পৃথিবীটা কি দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে।আমি প্রতিবাদ করেছিলাম তুই ঠিক বলছিস না।আমরা আমাদের মানসিকতার জন্য পাল্টে দিচ্ছি আর তুই বলছিস পৃথিবী পাল্টাচ্ছে। পৃথিবী হোল ঠিক মায়ের মতন একটু একটু করে কবে থেকে আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে আকাশ প্রান্তর নদী সমুদ্র অরন্য পাহাড়। আমরাই তাঁকে কেটেকুটে খনন করে পুড়িয়ে দিয়ে নিজেদের লোভের আগুন বাড়িয়ে ধ্বংস করছি দিনে দিনে। দেখিস না আমাদের নিজের বৃদ্ধ মা নিজের ঘরেই কেমন অবহেলিত।সামান্য দুটো খাওয়া পড়া জোটাতে তার সন্তানরা তাঁকে গঞ্জনা দেয়, নতুবা আবর্জনার মতন ছুঁড়ে ফেলে দেয় আস্তাকুড়ে। তবে কি জানিস দর্পণে যেমন নিজের মুখ নিজে দেখি ঠিক তেমনই আমরাও আমাদের সন্তান সন্ততিদের থেকে এমন ব্যবহারই পাব কথাটা যেন স্মরণ থাকে।
বাদ দে এসব কথা। শামিম, এত সক্কাল সক্কাল কোথায় চললি? একী উজ্জ্বল মুখটা কেন সজল হয়ে উঠল হটাত! দীপাঞ্জন তুই তুই আমায় তোর দর্পণে জীবন দর্শন করিয়ে দিলি। আজই আমার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতে যাচ্ছিলাম ।দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে- খুব খুব ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। আমি নিজের ভুল নিজে বুঝতে পেরেছি। কান্নার সুরে শামিম বলে উঠল- আমার মা কিন্তু সরল মনেই বলেছিল তোমরা আমার সন্তান যা ভাল বুঝবে তাই করবে। তখন আমি মায়ের কথার অর্থ বুঝিনি। আমার চোখ খুলে গেছে। এখনি বাড়ি গিয়ে মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবো তুই কি আমার সাথে যাবি? চল শামিম আমিও তোর সাথে যাব। ঠিক তখুনি আকাশ থেকে ঝম ঝম করে সূর্যের প্রখর দাবদাহ থেকে মুক্তি দিতে অমৃতধারার মতন বৃষ্টি নামল। আমরা দুই বন্ধু ভিজতে ভিজতে এগিয়ে গেলাম আগামী জীবনের পথে।