একে একে ওরা কবিতা হয়ে উঠছে
ওদের হাত বেয়ে নেমে আসছে
পান্তা ভাতের আমানি কি পরম তৃপ্তি!
একটা অবাধ্য মাছিকে বার বার তাড়াচ্ছে
মেয়েটার মা বলল -থাক বাছা থাক
ওরাও হয়তো অভুক্ত।
তোমার খাতার পাতায় ওরা কবিতা হোক।

কথাটা আজো কানে বাজে
সকাল হলেই সদর খুললে ওরা আসত
ময়লা ধুলো পোশাকে করুণস্বরে বলত
''মা একটা বাসি রুটি দেবে''
আমাদের টালির চালেই ছিল
পান্নার মতন শেওলা সবুজ অভাব;
তবু মা বলত -দাড়াও আসছি চলে যেওনা।
কলাইকরা থালে রুটির শব্দে
ওদের মুখে চলকে উঠত খুশির ঝিলিক।
ওরাই আজ তোমার কলমে কবিতা হোক।

বৃষ্টি হলেই জল জমে যেত রাজপথে
পাশেই ছিল বিশাল পুকুর রেলিং ঘেরা।
এক এক সময় পুকুর আর রাজপথ
মিলেমিশে হয়ে যেত এক একাকার।
শহরের গর্ব পিচকালো রাজপথ তখন সাগর
আমরা ছেলে ছোকরা ছন্নছাড়ার দল
নোংরা নর্দমা ঘেন্না অত বুঝতাম না।
বিনি পয়সার সাগর স্নান ছাড়তাম না।
সব বারণ নস্যাৎ করে ছুটে যেতাম;
ভীষণ মজা বৃষ্টি ভিজে পুকুরের মাছ ধরা।
ওরা হয়ে উঠুক আজ তোমার কবিতা।

যাকে দেখবার জন্য স্কুলের পথে
গানের স্কুলে রথের মেলায় অপেক্ষা করতাম;
সেও দেখে নিত আড়চোখে আমি কোথায়
তারপরেই তার ন্যাকামি বেড়ে যেত;
যেন কিছুই জানেনা চেনেনা
ভীষণ রাগে তখন প্রখর রৌদ্র জ্বলুনি।
একদিন বসন্ত পঞ্চমীর
অঞ্জলি শেষ হতেই বলে ফেললাম;
যে কথা বার বার মুখস্থ করেছি গোপনে
সে কথা জিভে গভীর আড়ষ্ট  লাগলো
না জানি কি বলে ফেলেছিলাম...
তখুনি একটা কালো পর্দা নেমেছিল
কেমন যেন সুন্দর সংগীতের ছন্দপতন।
সে কথা এখন ইতিহাস, হয়ে যাক কবিতা।
আর নয় বাকি আবার পরে ...