আলতো নতমস্তকে অবলোকন করে চলেছ,
বহু দিনের চেনা জীর্ণ একটা বাঁশের সাঁকো।
মনে মনে এই বুঝি আশঙ্কা করেছিলে
হুরমুড়িয়ে ভেঙে পড়বে নদীর ঘোলাজলে;
বিশ্বাস করিনি তোমার ঐ সাবধান বানী।
আমি তাই মনে মনে বলেছিলাম
-উঁহু যেন কোথাকার প্রসিদ্ধ খ্যাতিমান নৃতত্ত্ববিদ!
কদিনেই তোমার কথা সত্যি হয়ে গেল।
বুঝে গেলাম তুমি ঠিক কথায় বলেছিলে।
রাতের অন্ধকারে মুখগুঁজে হারিয়ে গেল।
প্রশ্ন আমার একটাই
সেই সাঁকো একদিন না একদিন ভেঙে পড়তই
যা পুরানো তা একদিন অতীত হয়।
ওখানেই আবার মানুষের প্রয়োজনে
নতুন নামে নতুন একটা সেতু হবে।
তাহলে তোমার বলে কি রইলো বলবে?
দুহাত পিছনে রেখে পলাশরাঙা মুখে
অনর্গল নীলকাশ সাক্ষী রেখে বলে গেলে...
-যা চলে যায় তা আর ফিরে আসেনা ঠিকই,
তবু গোলকচাঁপা সুবাসিত প্রেম
বোতামখোলা হৃদয় বেলায় আছড়ে পড়ে।
স্মৃতির গোপনঘরে তখন জারুল ফুটতে থাকে।
ঐ সাঁকোই একদিন নিবিড় সাক্ষী হয়েছিল
তাঁর সাথে তোমার প্রথম পরিচয়।
নদীর স্রোতেই মিশে গিয়েছিল,
তাঁর ঝরঝর ঝর ঝর্ণাধারা হাসি;
বকুলের মালা পড়িয়ে গান শুনিয়ে ছিলে
''এই কথাটি মনে রেখো''
তারপর... অসমাপ্ত গল্পকথা শেষটা শোনা হোল না।
বলেছিলে -নিজের মতন করে সাজিয়ে নিও চুপকথা।
তাই...
তোমার নামে নাম দিয়েছি আমার কলম'কে
সাথে সাথে পাশে নিরন্তর থাকবে বলে;
ম্যাপল গাছের পাতা কোথায় পাবো?
তবু অন্তরজালে খুঁজে তাই ভাসালাম।
তুমি তখন হলুদ পাপড়ি ভাসা ঝিলের জলে
রাজহংসের মতন দিব্যি দেদার দিচ্ছ সাঁতার।
যাবার আগে পিছনপানে ফিরে
অস্ফুটে শেষকথা কিছু কি বলতে চেয়েছিলে!