যাহা পাইবার নিমিত্তে সহস্র তৃষ্ণা জাগিয়াছিল অন্তরে,সেই আশার প্রদীপে অন্ত অবধি ছাই ভিন্ন  কিছু নাহি জুটে।
নিদ্রাহীন রজনী স্রোতে
আমি কেবলই খুঁজিয়াছি আশ্বাসের এক টুকরো আলো,
যাহা ছিলো এতটাই সন্নিকটে,যেন হাত বাড়ালেই পাইবো–
তবুও তরুছায়া ছুটিয়া চলে,চূড়ান্ত গন্তব্য কভুও নাহি মিলে।

যে দিনগুলো তে হৃদয় আর মস্তিষ্কের মুদ্রা বিনিময় করিয়াছিলাম,
তখনও জানিতাম না নিয়তির কঠিন সত্য,
জীবন তো এক অদৃশ্য খাতায় লেখা হিসাব,
প্রথম পৃষ্ঠায় বাল্যকালের স্মৃতি —
কত আনন্দ, কত প্রহসন; অথচ, চক্ষুর পলকেই তার অবসান।

আসলেই কি প্রয়োজন ছিল এতখানি ছুটিয়া চলা,
নিজের ছায়ার পিছু পিছু নিঃশেষ হইবার এই প্রক্রিয়া?
নাকি সকল ত্যাগের পরও রিক্ত হস্তে ফিরিবার মাঝেই ছিলো জীবনের বৃহত্তর অর্থ, এই কী নীরব সত্য?

তাহার পরের প্রতিটি পৃষ্ঠায় লেখা হয় বিচ্ছেদ আর বিষাদ-সিন্ধুর আখ্যান,
মাঝে মাঝে মিথ্যে আশা, যাহা অমৃত বলিয়া ভ্রম ঘটে সকলের।
ঘোর কাঁটিলে জানিতে পারে, তাহা বিষাক্ত অভিশাপ, অন্তরে স্থায়ীভাবে থাকিয়া যায় যাহার দাগ!
সময়ের কলম থামিবে না, চলিতে থাকিবে অনন্ত যাত্রায়,
তবুও মোরা মেকি কামনায় বুক বাঁধি, সোনার হরিণের পিছু ছুটিয়া চলি।

জীবনের অন্তিম ক্ষণে যখন অন্ধকার ঘনিয়া আসে,
তখন বুঝিতে পারি, জীবন এক স্বপ্নিল মরীচিকা,
যাহা ধরা দেয়ার অগ্রে মিলাইয়া যায় দিগন্তের সীমায়।

নিঃশেষ হওয়ার সংগ্রামে পথের শেষে যাহা রহিয়া যায় – একাকিত্বের বিষাদ, তবুও এক অনির্বচনীয় শান্তি। মনে হয়, যাহা পাই নাই, তাহার মাঝেও লুকাইয়া ছিল আমার সর্বোচ্চ প্রাপ্তি!