হ্যাঁ, সে-অর্থে তোমাকে আমি কিছুই দিতে পারিনি,
এ মোর সহজ স্বীকারোক্তি!
তবে যতটুকু পেয়েছো তুমি মোর থেকে,
ভেবে দেখো তা কি সত্যিই তুমি ডিজার্ভ করতে?
স্বীয় বিবেক-আঙিনায় রেখেছো কি প্রশ্ন'টি?
যতটুকু আমি ডিজার্ভ করতাম তোমার থেকে,
তার কতটুকুই বা তুমি আমাকে দিলে!
আমার চেষ্টার সীমা ছিল, তবুও তাতে মন্দ কী?
তোমার চাহিদার সাগরে আমি হয়তো ছোট্ট ঢেউ,
সেই ঢেউয়ের স্পর্শে কখনো কি ভিজেছিলে ?
নাকি কেবল শুকনো বালুতেই পা রেখেছিলে ?
হয়তো কাঠগড়ায় দাঁড়ানোই আমার নিয়তি,
তোমার অভিযোগের তালিকা দীর্ঘতর হতে পারে,
তবুও জিজ্ঞেস করো নিজেকে—
"আমার দেওয়া সীমায়, আমি কি সত্যিই তোমায় বুঝেছি?"
ভালোবাসা কি শুধু দান-গ্রহণের সমীকরণ?
নাকি অনুভবের এক অনন্ত সমুদ্র,যেখানে ডুব দিতে হয়।
যদি প্রশ্নগুলো থাকে উত্তরহীন,
তবে কি আমরাই সেই সত্তা—অপূর্ণতা যার নিয়তি?
কিন্তু জানো তো, ভালোবাসা কখনোই চাওয়া-পাওয়ার খেলা নয়,
এ তো এক অন্তহীন দেওয়া, যেখানে ক্রমশ নিজের অস্তিত্ব বিলীন হয়।
যদি কখনো ভুল বোঝা-বুঝির দেয়াল স্থায়ী হয়,
তাহলে হয়তো মেঘলা আকাশই হবে আমাদের গল্পের শেষ দৃশ্য।
তবে কি এই মেঘলা আকাশের আড়ালেই
থাকে এক সূর্যালোকের প্রতীক্ষা,
যা থাকে দূরে কোথাও হেসে ওঠার অপেক্ষায়?
হয়তো ভালোবাসা শুধুই এক অপেক্ষা,
অপূর্ণতার মাঝেও পূর্ণতার খোঁজে থাকা।
ভুল বোঝা-বুঝির দেয়াল যতই শক্ত হোক,
একটি মৃদু স্পর্শেই কি ভেঙে পড়তে পারে না সব?
যদি না পারে,
তাহলে হয়তো আমাদের গল্পের শেষাংশ,
এক সুরের মতো অপূর্ণই রয়ে যাবে।
কিন্তু সেই অপূর্ণতা তো
ভালোবাসারই নামান্তর,তাই নয় কি?
তুমি কি সেই আলো হতে পারবে,
যে আলো প্রতীক্ষার শেষ এনে দেয়?
নাকি আমরা রয়ে যাবো দু’টি ভিন্ন তীরে,
যেখানে নদীর স্রোতই কেবল কথা দেয়?
যদি আমরা ভিন্ন তীরে রয়ে যাই,
তবে সেই নদী কি আমাদের নাম মনে রাখবে?
নাকি তার স্রোতেও হারিয়ে যাবে আমাদের গল্প,
যেখানে স্মৃতিগুলো শুধুই ভাসমান ছায়া হয়ে থাকবে?
তবুও হয়তো কোথাও থেকে যাবে এক প্রতিধ্বনি,
তোমার প্রশ্নের, আমার উত্তরহীন নীরবতার।
সেই প্রতিধ্বনি কি কখনো পৌঁছাবে তোমার কাছে?
নাকি তা হারিয়ে যাবে সময়ের অসীম বৃত্তে?
তুমি কি সেই কণ্ঠ হতে পারবে,
যে প্রতিধ্বনিকে আবার বাঁচিয়ে তুলবে?
নাকি এই নীরবতাই আমাদের শেষ পরিচয়,
যেখানে আলো আর অন্ধকার মিলে একাকার?