নিরব প্রভাত ।
ক্ষীণ আলোয় শান্ত প্রকৃতি ।
পাখির কলরবে এ যেনো অশান্ত প্রায় ।
অরূণোদয়ের প্রতীক্ষা ।
বিশুদ্ধ নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস প্রশান্তি এনে দেয় ।
ব্যস্ততাময় জীবন-জীবিকার তাগিদে ধাবমান জনতা ।
কাঠপোড়া রৌদ্রের তীব্রতায় দিকভ্রান্ত ফিঙে ।
কখনো হিংস্র কালবৈশাখীর দোর্দণ্ডপ্রতাপ ।
শঙ্কিত আমি ।
ঝরে পড়া কৃষ্ণচূড়ার নিদারুণ মর্মব্যথা!
কানপেঁতে শুনি ।
বাসন্তী, নীল, হলুদ এবং অগ্নিবর্ণ ফুলের অনুপম সৌন্দর্য ।  
অবাক হয়ে দেখি অনাবিল সবুজ প্রান্তর ।
গ্রাম্যবধূর আশমানি রঙা শাড়ির আঁচল উড়ে মৃদু বাতাসে ।
নহরের তীরে কাশবনে সাদা বক দম্পতির লুকোচুরি ।  
কেটে আসা রঙিন ঘুড়ি হারিয়ে যায় অচিন আকাশে ।
আঁকাবাঁকা মেঠো পথে দুরন্ত শৈশবের পদাঙ্ক ।  
শির উঁচু করা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে স্পর্শ করি কুজ্ঝটিকা ।
মায়াবী দিগন্তের হাতছানি ।
আষাঢ়ে বৃষ্টিভেজা কিশোরীর প্রাণোচ্ছলতা ।
টিলার পাদদেশে নৃ-গোষ্ঠীর আনারস, চা, কলা ও ঝুমচাষের উপর বিমুগ্ধ দৃষ্টিপাত ।
ঝর্নার নির্মল স্রোতধারায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠে লতা-গুল্ম, শ্যাওলা ও নুড়িপাথর ।  
পাহাড়ী বনফুলের মাতাল গন্ধে দিশেহারা ভ্রমর ।
পরিশুদ্ধ ভালোবাসা স্পর্শ করে প্রেয়সীর মন ।
তেজোদীপ্ত সূর্যের আলোয় মুক্তা জ্বলে দূর সাগরের জলরাশিতে ।
নীলিমায় অদৃশ্য হয় শুভ্র তুলা মেঘ ।
কদাচিৎ, গহীন বন থেকে বাতাসে ভেসে আসে ক্ষুধার্ত বাঘের আর্তনাদ ।
অভাবী জেলের আশা-আকাঙ্খা বন্ধকী থাকে অসীম সমুদ্রের কাছে ।
সৈকতে ধেয়ে আসা উত্তাল ঢেউগুলো নৃত্যের তালে তালে মুছে দেয় মানব পদচিহ্ন ।
গাংচিল দুর্বার গতিতে উড়ে যায় অজানা গন্তব্যে ।
ধলেশ্বরী নদীর ঢেউয়ের বাঁকে এক চিলতে সুখের হাসি ।
লাল কাঁকড়াগুলো বুনো উল্লাস করে তটভূমিতে ।  
গোধূলির রক্তিম আভায় আচ্ছন্ন পশ্চিমাকাশ ।  
অতিষ্ঠ করে তোলে ঝিঁঝি পোকার অবিরাম ঝাঁজালো কণ্ঠস্বর ।
সাজ প্রদীপ জ্বলে জোনাকির মিটমিটি আলোয় ।
আবহমান বাংলার এক অপরূপ প্রতিচ্ছবি ।
অপলক চেয়ে থাকি ।
সূর্যাস্ত ।
একটি সুন্দর স্বপ্ন ।
আগামী সূর্যোদয়ের ।