প্রায় দুপুর ।
রৌদ্রের দুর্দান্ত প্রতাপ ।
উষ্ণতার কাছে অনিবার্য বশ্যতা স্বীকার ।
জ্যৈষ্ঠের তাপদাহে তৃষ্ণার্ত হৃদয় ।
মাঝে মধ্যে বিরক্তিকর বিদ্যুৎ বিভ্রাট ।
যেনো মরার উপর খাঁড়ার ঘা ।
সাময়িকভাবে বিপর্যস্ত জনজীবন ।
তবুও, যে যার মতোই কর্মব্যস্ত ।
লবণাক্ত ঘাম ঝরে শরীরের সূক্ষ্ম রোম কূপ থেকে ।
কেউ তৃপ্ত হয় লেবু শরবত, ডাব, তরমুজ, লিচু, পেঁপে, আম, আনারস, কমলা ও তালের শ্বাঁসে ।
অথবা ঠাণ্ডা কোমল পানীয় বা হিমায়িত আইসক্রিমে ।
আবার কেউ পরিতুষ্ট হয় নলকূপ, দিঘি, নদী, খাল, বিল, হাওর, জলাধার, স্নান কক্ষ ও সাঁতার-পুকুরে ।
কিংবা বৈদ্যুতিক পাখা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং উন্মুক্ত আকাশের নিচে ।
কারো সম্বল তালপাতার হাতপাখা ৷
কেউবা স্বাদ মেটায় আমলকি, রোয়াইল, আমড়া, কামরাঙ্গা, জাম্বুরা, করমচা, চালতা, কৎ বেল, জামরুল, জলপাই, বিলাতী বেগুন, বরই ও কাঁচা আম ভর্তায় ।
যদিও কমতি নেই তাপদাহের চোখ রাঙানি ।
বৃষ্টি প্রত্যাশিত চাতক পাখির আকাশ পানে দৃষ্টিপাত ।
অবিরাম ডুব-সাঁতারে ব্যস্ত বুনো রাজহাঁস দম্পতি ।
সূর্যের প্রখর তাপে গলায়মান পিচ ঢালা পথে মানব পদচিহ্ন ।
গাড়ী চালক গন্তব্যের সময়টুকুকে মুষ্টিবদ্ধ করে ছুটে যায় তীব্র গতিতে ।
দূরবর্তী তপ্ত পথে দৃশ্যমান ঝাপসা-ধোঁয়াশা ।
বেওয়ারিশ কুকুরটির ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে বের হওয়া অর্ধ-জিহ্বা থেকে লালা নির্গত হয় ।
হঠাৎ সাইরেন বাজিয়ে ধেয়ে আসা অ্যাম্বুলেন্স দেখে আঁতকে উঠে প্লীহা ।
অস্বস্তিকর উষ্ণতায় অপেক্ষমাণ ক্লান্ত পথিকের বাড়ি ফেরার তাড়া ।
মনে হয়, নিষ্প্রাণ দেহে সটান দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি সবুজ গাছগুলো ।
আচমকা দক্ষিণা দমকা হাওয়া ।
পরিতৃপ্ত করে মন এবং সতেজতায় প্রাণ ফিরে পায় প্রকৃতি ।
এ এক পরম প্রশান্তি ।