(কল্পনাপ্রসূত, বিস্ময়কর রূপকথা, প্রেয়সী, আবেগজড়িত প্রেম) | [গদ্য কবিতা] 🩷
প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর পূর্বে ।
অতিপ্রাচীন এক পরমাণুর শক্তিশালী মহাবিস্ফোরণ ৷
মহাবিশ্বের উৎপত্তি ৷
দীর্ঘকালের পরিবর্তন ও বিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রাণের আবির্ভাব এ ধরণীতে ৷
নির্জীব পদার্থ থেকে জীবন্ত প্রাণে রূপান্তর ৷
কয়েকটি পরমাণুর স্বতঃস্ফূর্ত মিলনের পরিণতিই মানবজাতির জন্ম ৷
সময়ের ব্যবধানে মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশে সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত ও বিবর্তিত হয়ে স্বতন্ত্র গতিতে এবং নিয়মে জন্ম নিয়েছি আমি ।
উপলব্ধি করি নিজের অস্তিত্ব ৷
কল্পনা করি কতো কি…
এবং তোমাকে ৷
তোমার মনের গহিনে জমে থাকা যে কথাগুলো কানপেঁতে শুনেছি কোনো এক অমাবস্যা রাতে ৷
অনুভব করি তোমার ভাবনাগুলো ৷
রঙিন-সুবর্ণ স্বপ্ন দেখি দুই চোখে ৷
তোমার হৃদ স্পন্দন আন্দোলিত করে আমাকে ৷
প্রাণখোলা হাসিমাখা মুখচ্ছবি দেখি নায়াগ্রা জলপ্রপাতে ৷
নাকফুলের মণিরত্ন তন্ন তন্ন করে খুঁজি প্রশান্ত মহাসাগর তলদেশে ৷
চোখের পাপড়িগুলো অপরূপ কারুকার্য করা রঙধনুর রঙে ৷
এলোমেলো চুল উড়তে দেখি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দমকা বাতাসে ৷
ঠোঁট যুগলে ম্যাগমার রক্তিম আভা ৷
আলকাতরা কালো দীঘল চুলের সিঁথি কাটা জমিনে বঙ্গোপসাগরের রুপালী ইলিশের চাকচিক্যময়তা ৷
চাহনিতে লুকিয়ে আছে আমাজন অরণ্যের আদিম নৃ-গোষ্ঠীর অভিব্যক্তি ৷
দুই পায়ের নূপুরে অলিভাইন ও জিরকনের নীলকান্তমণি ।
সফেদ দাঁতে বর্ণিল আলোকচ্ছটা হিংস্র বজ্রপাতের বিদ্যুৎ চমকানিতে ।
খোঁপায় পরা অপূর্ব নীলাকুরিঞ্জি, এডেলউইস ফ্লফি আলপাইন, মরুভূমির গোলাপ এবং জেড ফুল ৷
অস্পষ্ট পদচিহ্ন খুঁজি গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গিরিখাতে, প্রিপেট মার্শেস বনাঞ্চলে, মোজাভে-নামিব মরুভূমিতে, লেক ডায়মন্তে-বৈকাল হ্রদের তীরে, ওয়ম্যাকন গ্রামীণ এলাকায়, ডেনিসোভা গুহায় এবং সুদীর্ঘ সাভানা তৃণভূমিতে ৷
ললাটের টিপ আরক্তিম সূর্যাস্ত ৷
নাকের ডগায় অসামাল হয়ে পড়ে হিমালয় এবং আল্পস পর্বত চূড়ার শিশিরকণা ৷
বাম হাতের অনামিকায় রঙধনু পাহাড়ের মাটি খুঁড়ে তুলে আনা ওপাল রত্ন পাথর ।
দুই ভ্রুতে চিরস্থায়ী বসতি গেড়েছে সুন্দরবনের বাঘিনীর শরীরের ডোরাকাটা কালো পশম ৷
লাজুক গালে টোল পড়ে চেলিয়াবিনস্কের উল্কাপাতে ৷
দুই কানে সাদা স্বর্ণের তৈরি অনিন্দ্য সুন্দর নীল পোখরাজ এবং হীরা ঝরা কানের দুল ।
হিমাঙ্কের নিচ তাপমাত্রায় ইনুইটদের বরফের তৈরি রেস্তোরাঁয় বল্গা হরিণ ও সামুদ্রিক উদ্ভিদের সুরুয়া এক অমৃত স্বাদ ৷
মহাধোঁয়াটে ও বরফাচ্ছন্ন গ্রেট স্মোকি পর্বতমালার সর্বোচ্চ শিখরে ভেসে থাকা মেঘ আর কুয়াশার ফাঁকে অপরূপ নীলাভ আলোর বিচ্ছুরণেই তোমার মাহাত্ম্য ৷
মসৃণ নখ থেকে প্রতিফলন ঘটে পৃথিবীর প্রাচীনতম উজ্জ্বল গোলাপি রঙ ৷
চেতনায় ও মননে আদি-অন্ত কালের সভ্যতা গড়ে ৷
নিঃশ্বাসে সুমিষ্ট গন্ধ পাই জাফরান, চন্দন, দেবদারু, ঘৃতকুমারী, দারুচিনি, জলপাই, কস্তুরী, উপত্যকার কমল এবং শরৎ গোলাপের ৷
লজ্জাপরায়ণ হাসিতে প্রভাতের সূর্যোদয় ৷
চোখের কোণে কাজল গলে শীতল সমুদ্র স্রোতে ভেসে আসা হিমশৈলের মতো ৷
বিষণ্নতায় নীলাকাশে কালবৈশাখীর ঘনঘটা ৷
স্বাধীনচেতা রহস্যময়ী মন বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতোই রহস্যে ঘেরা ৷
অদ্ভুত আচরণ যেনো ভূগর্ভস্থ ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া অঞ্চলের এক নাট্যশালা ৷
ক্ষোভে ফুঁসে উঠে আটলান্টিক মহাসাগরের ভয়ঙ্কর সুনামি ।
পথচলায় প্রজাপতির চপলতা ৷
কঠোর মনোভাব মহামূল্যবান কোহিনূর হীরকের মতোই কঠিন ৷
বিদ্রোহ রূপ নেয় মাউন্ট নাইরাগোঙ্গো, মাউনা লোয়া এবং ফাগ্রাডালসফজাল আগ্নেয়গিরির ভয়ানক জ্বালামুখ ৷
আদর্শে অনুপ্রাণিত হয় নীলিমায় মিশে যাওয়া সাদা তুলা মেঘ ৷
নীল শাড়িতে নও তুমি কোনো এক সম্রাজ্ঞী, কোনো রানী কিংবা ব্রিটিশ রাজবধূ কেট মিডলটন, তবুও তুমি এক গরবিনি বাঙালি নারী ৷
হাতের কঙ্কণ ও কণ্ঠহার খুঁজে পাই পৃথিবীর ডুবন্ত মহাদেশ জিল্যান্ডিয়াতে ।
দাম্ভিকতায় তেজস্ক্রিয় ক্যালিফোর্নিয়াম এবং প্রতিকণার বিস্ফোরণ ঘটে ৷
কদাচিৎ তোমার ইচ্ছার কাছে বন্ধকী থাকে আমার স্বাধীনতা ৷
একটু ব্যর্থতা এবং নির্বুদ্ধিতার কারণে আমাকে অনুশাসনে থাকতে হয় ৷
তোমার সংকীর্ণতা, অবজ্ঞা, দুঃসাহসিকতা এবং অনাকাঙ্খিত সন্দেহপ্রবণতা সৃষ্টি করে চীনের মহাপ্রাচীর ৷
বিরহ এক বীভৎস দাবানল ।
চাঁদের আকর্ষণে জোয়ার-ভাটা হয়, সেখানেই তোমার ব্যক্তিত্বের প্রকৃত সৌন্দর্য ৷
শিরীন, লায়লা এবং জুলিয়েটের চেয়েও কি কম তোমার ভালোবাসা?
বিস্তীর্ণ সাহারা মরুপ্রান্তরের বালু ঝড়ে একদিন দিশাহারা দু’জন!
ক্ষণিকের স্বস্তি ৷
মার্জিত-নম্র স্পর্শে অনুভব করি আদিম উন্মত্ততা ।
প্রত্যাশা, ন্যায্যতা এবং অপূর্ণতায় আমার অসহায়ত্বের অপরাধবোধ ৷
উদভ্রান্ত মনে ভাবি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের করুণ পরিণতির কথা!
আমাদের বৈধ এবং উর্বর উত্তরসূরী অনাগত দিনে অভিযোজন করতে সক্ষম হবে কি?
তোমার নির্ভরতা পাই, আশ্বস্ত করো যে; আমরাই গড়বো একটি শান্তিময় সবুজ বসুন্ধরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ৷
স্নেহপূর্ণ হাতের সংস্পর্শে ভালোবাসা, শান্তি, ঐক্য, প্রগতি, সমতা, নিরাপত্তা এবং মানবতার আহ্বান ৷
বিশ্বস্ততা আত্মাকে শান্ত ও পরিশুদ্ধ করে ৷
ইচ্ছে করে-
তোমার হাত ধরে হেঁটে যাই কাস্পিয়ান হ্রদ এবং পানামা খালের তীর ধরে নক্ষত্রময় রাতের আকাশে,
না পালি তটভূমিতে,
প্রাকৃতিক দর্পণ সালার দে উয়ুনিতে,
ভেইওয়াভটন আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের ফলে অগ্নিমুখে উৎপন্ন অবিশ্বাস্য সুন্দর নীল রঙের গভীর লজোটিপোল্লুর হ্রদের পাশে,
সারি সারি সুউচ্চ-বর্ণময় রামধনু ইউক্যালিপটাস গাছের নিচে শীতল ছায়ায়,
প্রাচীন আগ্নেয়িরি ডায়মন্ড হেডের উপরিভাগে,
প্লেনিউ আইল্যান্ডের উদ্দাম তুষার ঝড়ে,
উঁচু পর্বতপৃষ্ঠের হিমবাহ থেকে সৃষ্ট প্রকৃতির নিরুপম সৌন্দর্যের গোলাপি রঙা সুপেয় পানির হ্রদ ডাস্টি রোজ এর কিনারায়,
দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের দুর্গম, জনবিচ্ছিন্ন ও দূরবর্তী দ্বীপ বুভেট আইল্যান্ড এবং ত্রিস্তান দা কুনহাতে,
হিমশীতল শ্বেত মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকার অজানা, অদেখা, রূঢ়, নির্জন, দুরারোহ এবং বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির মাঝে ধবধবে সাদা এক অনন্য সুন্দর 'তুষার পেট্রেল’ পাখির খোঁজে,
নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরা আন্দিজ পর্বতমালা এবং মাউন্ট রোরাইমাতে দাঁড়িয়ে মেঘ ছুঁয়ে দেখতে,
অশ্বীর দুধের চা পান এবং তাদের পশম দিয়ে তৈরি তারের বীণার ঐন্দ্রজালিক সুরের মূর্ছনার কাছে ।
নয়তো, তোমার হাত ধরে কুক প্রণালী এবং কুইন্সল্যান্ডের স্বর্ণ উপকূলে বিরল প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী সাদা তিমি মিগালু পুত্রের দুরন্ত পথচলা দেখি ৷
কখনো মহাসাগরের বিস্তৃত জলরাশির হিমশীতল তলদেশে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটের প্রাচীনতম অংশে অবস্থিত মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় পর্বতমালা, দক্ষিণ-পশ্চিম ভারত মহাসাগরের পশ্চিম সীমানার ক্ষিপ্রগতির এক শক্তিশালী আগুলহাস স্রোত, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে ভৌগোলিক অধোগমন প্রক্রিয়ায় গঠিত অর্ধচন্দ্রাকার মারিয়ানা ট্রেঞ্চ খাদের দক্ষিণ প্রান্তের সবচেয়ে গভীরতম বিন্দু চ্যালেঞ্জার ডিপ, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর অববাহিকায় উত্তরমুখী উষ্ণ মহাসাগরীয় কুরোশিও স্রোত এবং টেকটোনিক প্লেটের কারণে সৃষ্ট মধ্য-মহাসাগরীয় শৈলশিরার অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বিমুগ্ধ নয়নে উপভোগ করি ৷
অথবা মহাজাগতিক উপনিবেশ সৃষ্টির জন্য নয়- নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই ক্লাউড কম্পিউটিং পরিসেবা, ন্যানো প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি, অ্যালবেডো বৈশিষ্ট্য, টেলিপোর্টেশন প্রযুক্তি, কার্কউড শূন্যস্থান, কোয়ান্টম বলবিজ্ঞান, স্ট্রিং তত্ত্ব, অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যের বহিরাগত পদার্থ, কাল্পনিক মহাজাগতিক গঠন বা মহাকাশের দুইটি দূরবর্তী বিন্দুকে সংযুক্ত করা, শ্বেত গহ্বর এবং অনন্ত মহাবিশ্ব নিয়ে ভাবনাগুলোর মধ্য দিয়ে এক প্রাণবন্ত বিশ্বায়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সংকল্প করি ।
ইচ্ছে করে-
প্রাচীন ভারতীয়, মেসোপটেমিয় (আক্কাদীয়, সুমেরীয়, ব্যাবিলনীয়, অ্যাসেরীয়, ক্যালডীয়), মেহেরগড়, এজিয়ান, মিশরীয়, কারাল-সুপে (নর্তে চিকো), সিন্ধু, হিব্রু, গ্রীক, পারস্য, রোমান, চৈনিক, ওলমেক, হেলেনিস্টিক, মায়া, অ্যাজটেক এবং ইনকা সভ্যতার সূচনা-বিকাশ-বিস্তৃতি-ধ্বংসাবশেষকে ফিরে দেখি ।
যদিও সেখানে প্রত্যক্ষ করি: জাতি-গোষ্ঠী, ভাষা, জীবনযাত্রা, পরিবার, সুখ, দুঃখ, হাসি, আর্তনাদ, সমাজ, সভ্যতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, শিল্পকলা, বিজ্ঞান, আইন, দর্শন, স্থাপত্য, শিল্প, বাণিজ্য, সংস্কার, কুসংস্কার, সৃষ্টি, কল্যাণ, রাজনীতি, ক্ষমতা, যৌনতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিহিংসা, বিদ্রোহ, ষড়যন্ত্র, শক্তিমত্তা, আগ্রাসন, ব্যভিচার, যুদ্ধ, গণহত্যা, গহযুদ্ধ, রক্তপাত, ধ্বংস, দুর্ভিক্ষ, রাজনৈতিক উত্থান-পতন, মিত্রতা, ভিন্নমত, ভালোবাসা, পরকীয়া, বিচ্ছেদ, পৌরাণিক কাহিনী, ধর্মবিশ্বাস, ধর্মদ্রোহিতা, রোগব্যাধি, মানবতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগকে ।
ইচ্ছে করে-
আদিম মানব, প্রাগৈতিহাসিক যুগ, প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ বা ধ্রুপদী-উত্তর যুগ, আধুনিক যুগ এবং সমসাময়িক যুগগুলোর মধ্যে এক চিরস্থায়ী সেতুবন্ধন গড়ে তুলে মনুষ্যত্ববোধের প্রতিনিধিত্ব করি ।
এ তো এ পৃথিবী—
ইচ্ছে করে-
ছুটে যাই অগ্নিময় সূর্যের হৃদপিণ্ডে, বুধ গ্রহের সবচেয়ে উত্তপ্ত স্থান অর্ধসৌর বিন্দুতে এবং ক্যালোরিস মন্টেস রৈখিক পর্বতমালায়, শুক্র গ্রহের অতিক্রমণের সময়ে- ভেনুসিয়ান আগ্নেয়গিরিতে এবং ম্যাক্সওয়েল মন্টেস পর্বতশ্রেণীতে, লোহিত মঙ্গল গ্রহের বৃহত্তম অলিম্পাস মন্স আগ্নেয়গিরিতে- দক্ষিণ মেরু সমভূমির প্ল্যানাম অস্ট্রেল বরফটুপিতে- ভ্যালেস ম্যারিনারিস গিরিখাতে এবং বরফ স্ফটিকের তৈরি সাইরাস মেঘে, সৌরজগতের সর্ববৃহৎ গ্যাসীয় দৈত্য বৃহস্পতি গ্রহের তরল হাইড্রোজেনের মহাসাগরে এবং বিস্ময়কর প্রতীপ ঘূর্ণিঝড় মহা লাল বিন্দুতে, মস্ত শনি গ্রহের চারপাশে ঘূর্ণায়মান বৈচিত্র্যময় প্রকাণ্ড বলয়রাশির ভিতর অন্ধকার ফাঁকা জায়গা ক্যাসিনি বিভাজনে এবং উত্তর মেরুর দৈত্যাকার ষড়ভুজ ঝড়ে, বরফ দানব ইউরেনাস গ্রহের হীরা বৃষ্টিতে এবং অন্ধকার মেরুর শীতলতম স্থানে প্রবাহিত তীব্র বাতাসে, নীলাভ নেপচুন গ্রহের মেঘমালায় এবং দুর্দান্ত মহা অন্ধকার বিন্দুতে, বামন প্লুটো গ্রহের বরফ পাহাড়ে- হৃদয় আকৃতির টমবাঘ রেজিওর বৃহত্তম উজ্জ্বল পৃষ্ঠে- বিষুব রেখা বরাবর বেল্টন রেজিওর দীর্ঘায়িত অন্ধকার অঞ্চলে এবং নাইট্রোজেন বরফের প্রচুর উজ্জ্বল হিমবাহে নিমজ্জিত স্পুটনিক প্ল্যানিটিয়া অববাহিকায়, এছাড়া প্রতিটি উপগ্রহে, গ্রহাণুপুঞ্জে, উল্কায়, ধূমকেতুতে, কুইপার বেষ্টনীতে, সৌরমণ্ডলে, সৌর নিবৃত্তিতে, উষ্ণ উদজান প্রাচীরে, আন্তঃনাক্ষত্রিক মাধ্যমে, সৌরজগতের বাইরে আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাশূন্যে, বহিঃসৌর গ্রহে, জলীয় বাষ্পের গোলাকৃতি উর্ট মেঘে, নক্ষত্রমণ্ডলে, আণবিক মেঘে, অতিনবতারা বিস্ফোরণে, নীহারিকায়, ছায়াপথে, আপাত-নক্ষত্রে, গ্রাসকারী কৃষ্ণগহ্বরে, মহাকাশে ভাসমান জলাধারে, বুটেস ভয়েডে, লানিয়াকেয়া ছায়াপথ মহাস্তবকে, দানবীয় গ্যালাকটিক কাঠামোয়, রাক্ষুসে বড় আপাত-নক্ষত্রের দলে, অসুর গামা রশ্মি বিস্ফোরণের বলয়ে, বিশাল মহাজাগতিক জাল কাঠামো হারকিউলিস-করোনা বোরিয়ালিস গ্রেট ওয়ালে এবং ৯৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের প্রান্তে কিংবা অনন্ত মহাবিশ্বে ।
মানবহীন, ঠাণ্ডা, উত্তপ্ত, গ্যাসীয় এবং অন্ধকারময় অপার মহাকাশের এক অজানা রহস্যেঘেরা নৈঃশব্দের জগতে ৷
দূরে, বহুদূরে…
এ দীর্ঘ যাত্রাপথে স্বাগত জানাতে পারে ভিনগ্রহের কোনো অপরিচিত আগন্তুক বা সভ্যতায় অগ্রগামী বুদ্ধিমান প্রাণী পরক ৷
তুমি আর আমি—
শুধুই দুই জনে ৷
যদিও আমরা জিনগতভাবে আলাদা ৷
বিপরীত দুই প্রান্তের, ভিন্ন সত্তা ৷
তবুও, দুই জনের মধ্যেই ভালোবাসার শাশ্বত দৃঢ় বন্ধন ৷
এক অদৃশ্য শক্তি ৷
ঐশ্বরিক সম্পর্ক ৷
জানিনা, মহাবিশ্বের ভয়াবহ অন্তিম পরিণতি!
এ মৃত্যুন্মুখ মহাবিশ্ব এক সময় ধীর প্রক্রিয়ায় বিলীন হয়ে হারিয়ে যাবে শূন্যতার গহীন গহ্বরে ।
হতে পারে, কৃষ্ণ বা অন্ধকার শক্তির কারণে তরাণ্বিত গতিতে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ অথবা মহাকর্ষীয় আকর্ষণে মহাবিশ্বের আকার ক্রমাগত মহাসংকোচনের ফলে এক নৃশংস (ক) মহাশাব্দিক সঙ্কোচন বা মহাসঙ্কোচন বা মহাকড়কড় (খ) মহাশৈত্য বা মহাহিমায়ন (গ) মহাচ্ছেদন ।
যার পরিণাম: গ্রহ-নক্ষত্রগুলো একে অন্যের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে, মহাবিশ্বে নতুন ছায়াপথ ও নক্ষত্র তৈরি প্রক্রিয়া থেমে যাবে, ছায়াপথগুলো রক্তিম থেকে নীলাভে রূপান্তরিত হয়ে পরস্পর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাবে, আলোর উৎস নক্ষত্রের জ্বালানি ফুরিয়ে বা পুড়ে অন্ধকারে ডুবে গিয়ে মহাবিশ্বের সমস্ত নক্ষত্ররাজি নিঃশেষ হয়ে যাবে, কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের উপর আধিপত্য বিস্তার করে স্বতঃবাষ্পীভূত হবে, মহাকর্ষীয় পতনের ফলে বর্তমান মহাবিশ্ব ঘটনা দিগন্তের বাইরে চলে যাবে ও দৃশ্যমান স্থানগুলোকেও আর দেখা যাবে না, অসীম তাপমাত্রায় মহাবিশ্ব এক বৃহৎ অগ্নিগোলক ধারণ করে অতি উত্তপ্ত ঘনীভূত পর্যায়ে নিউক্লীয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রচণ্ড তাপীয় বিকিরণের সৃষ্টি করবে ফলে সেখানে প্রোটন কণিকাগুলো অস্থিতিশীল হয়ে হাইড্রোজেনকে অদৃশ্য করে রয়ে যাবে বিকিরণ, মহাবিশ্বের তাপীয় মৃত্যু হয়ে মহাহিমায়ন সৃষ্টি করে এটি অন্ধকার-শৈত্যময়-নির্জীব অবস্থায় পরিণত হতে পারে এবং এক সময় ছায়াপথ-ছায়পথ মহাস্তবক-গ্রহ-নক্ষত্র-অনু-পরমাণু-অতিপারমাণবিক কণা এমনকি স্থান-কালসহ সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে অগ্নিময় মৃত্যু ঘটবে ।
অর্থাৎ কেয়ামত ।
হয়তো সেখান থেকে নতুন করে জন্ম নিবে একটি মহাবিস্ফোরণ, যার থেকে পুনর্গঠিত হবে নতুন মহাবিশ্ব ৷
যেখানে স্ফীতি সৃষ্টি করে সম্প্রসারিত বুদ্বুদের বলয় থেকে মহাবিশ্বের মতোই অসংখ্য মহাবিশ্ব তৈরি হয়ে একটি অপরটির কাছ থেকে দূরে সংস্পর্শহীন অবস্থায় থাকবে ।
যদি তাই হয়, মহাবিশ্বের গঠন হবে পর্যায়ক্রমিক ।
প্রাকৃতিক বিবর্তন চক্রে যা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলমান থাকবে ।
তৈরি হবে একটি নতুন চক্র, যার শুরু বা শেষ নেই ৷
তবে কি, এ ধরণের অসংখ্য মহাবিশ্বের কোনো একটিতে আমাদের পুনর্জন্ম হবে?
যদি হয়, তাহলে শক্ত করে দুই হাত ধরে অংশীদার হয়ে থেকো ।
জানি, কোনো এক কালে মৃত্যু হবে অনিবার্য!
হয়, নরকের আগুনে দগ্ধ হবো আমরা একসাথে ৷
না হয়, স্রষ্টার অনুমতি নিয়ে অনন্তকাল তোমার হাত ধরে হাঁটবো স্বর্গের আট দুয়ারে ৷৷ ©
[তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, আন্তর্জাল]