দর্শন
-----
কোন একদিন নিরব ভোরে সুবেহ-সাদিকের আলোয়
স্ন্যান করে বাহন বাসের সিটে বসে চলেছিলাম আমি
মিরসরাই-শীতাকুণ্ডের পাহাড়ের সারি দেখে-দেখে,
আমি দেখেছিলাম প্রথম পাহাড় এইভাবে---
মহাপ্রতাপের বড়াই যে পাহাড়ের
তাকে আবার হয়েছিল মনে বড় অসহায়
যখন
বলেশ্বর পার হয়ে সুন্দরী বৃক্ষের পাশ কেটে
কটকার ধারে পৌঁছালাম ধীরে-
সমুদ্রের বিশালতাই হবে হয়ত
শ্রেষ্ঠ দুনিয়ার সবচেয়ে,
এসব পাড়ে নির্জন সৃষ্টির অন্তরালে
সমুদ্রের জলে বিশাল জগৎ কত হবে জল মহলের তলে
মাবুদই জানে--আমরা দেখি কল্পনার জল রাশি বিশাল-ভারি;
তারপর একদিন দেখি
ছোট-ছোট টিলা আর ঈষৎ লাল মাটি উৎরায়ে
মানুষের বাড়ি-কবর-গাছ-অন্ধকার সব জড়িয়ে আছে
নির্নিমেষে শেরপুর-শ্রীমঙ্গল-শ্রীহট্টের দেয়ালে,
ধ্যাণের রাজ্য আর তরবারি হাতে যেন বীর সেনা
আছে জেগে এই লাল মাটি নিয়ে পৃথিবীর পথে,
তিনশত ষাট জন আরো বারো জন
মাবুদের জন্য হয়েছিল বের এই পথে
বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবেসে;
ক্রমে-ক্রমে বরেন্দ্র ভূমি পেরিয়ে গৌড়, পূন্ড্র হয়ে
চন্দ্রদ্বীপে একদিন ঘুরে
জল-পানি-জোয়ার-ভাটা দেখে-দেখে সমতট-হরিকেলে পুরোনো যাত্রার কথা মনে করে হাওড়ের মানুষ-পানি-গানের গভীরতা মেপে
এখন আমি এত সব পথ পেরিয়ে
নিরবে দাঁড়ায় একা যদি কোনদিন
আমাদের মাঠে-তবে বাংলাদেশ
ভেসে ওঠে দুই চোখে টেকনাফ-তেঁতুলিয়া হয়ে
এক পলকে;
মনে ওঠে মানুষের পৃথিবী আরো আছে
আর আমি দেখেছি এতটুকু রূপ-গল্প-দৃশ্যপট মাত্র
আমার ভিতরে
স্রষ্টার বিলানো আলোয়
শতরূপের দেশে।