[ শৈশব ও কৈশোরের কবিতা-এগার ]

বাণী বন্দনা
-অসিত কুমার মন্ডল

মাগো সংকট তারিণী কাদম্বরী,
আজি তব নাম স্মরণ করি।
চেয়ে দেখো মা রিক্ত শিরে,
বসে আছি লেখনী ঘিরে।
বাণীর আসন-বাণীর খাতা,
রয়েছে খালি বাণীর দাতা।
চিত্ত ভাবে নিত্য তোমারে,
ভাবছি আমি কোন পাথারে!
বুঝতে নারি ভেবে মরি,
বাণী দাও গো বিদ্যাধরী।
কোন স্বপনে-কোন মিলনে,
গাঁথছি বাণী অবোধ মনে!
অলীক কথা, অলীক ভাষায়,
গাঁথছি আজি কোন পিয়াসায়?
শুনেছি যখন তোমার বিষাণ,
উড়িয়েছি আমি বাণীর নিশান।
তব বীণার ঝংকারে মোর,
করেছে সাধক বাণীর বিভোর!
বাণীর সন্ধান আমি অজ্ঞাত,
ধরেছি তবু -তব সেই পথ।

দিতে যদি হয় সারদা,
ঘুচাও মনের দ্বন্ধ-দ্বিধা।
মম মনের অভিসন্ধি,
রেখো না মাগো তুমি বন্ধি।
দাঁড়িয়ে আজি বাণীর তোরণে,
যাবো কি ফিরে ক্ষুন্ন মনে?
দ্বার ছেড়ে দাও বাগেশ্বরী,
অগ্রে আমি তোমায় স্মরি।
অশ্রু-ঝরাই বাণীর আশে,
নেত্র-নীরে কপোল ভাসে!
বাণীর সেবক আমি ক্রীতদাস,
অঞ্জলি দেবো বাণীর নির্যাস!
কতো অধমেরে পদরজ: দিয়া,
করেছো শান্ত ভরিয়েছো হিয়া!
তুমি কবি বিজয় শীরে,
বসে ছিলে আসন করে!
কবি কালিদাস ছিলেন অজ্ঞ;
তুমি তাঁরে করিলে বিজ্ঞ!
গহন মাঝে ব্রাহ্মণী রূপী,
করিলে তাঁর রসনায় লিপি।
ওঁ লিপিতে কাব্য-শস্য,
সৃজিয়ে করিলে কবিত্বে নমস্য!
বলিলে তোর হৃদির ভাব্য,
বদন বাহিরে হবে কাব্য!
সত্যই করিলে পৃথিবী পৃষ্ঠ;
তোমার আশীর-বাণীর সৃষ্ট!
এ হেন বিস্ময় করিলে সৃষ্টি,
জানি না কেমন তোমার কৃষ্টি!
যে পথ তুমি দেখিয়েছো মোরে;
তব নাম গাহি দিবানিশি ভরে।
যা কিছু লিখি আনিও স্মরণে;
জানাই প্রণতি তব চরণে!!
বৈশাখ-১৩৯৪ বঙ্গাব্দ।

[ কবিতাটি- শৈশব ও কৈশোরের কবিতা-গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত।]