সর্বদা কিসের ধ্যানে মগ্ন তিনি!
যেন তিনি শুনতে পেতেন কেউ ডাকছে তাকে,কিসের ডাক?
পাহাড় পর্বত তরুলতা জন্তু জানোয়ার যেন সবাই তাকে চেনে
তারা কিছু বলতে চায়! ধ্যান ভেঙ্গে যায়, আবার মগ্ন হয়ে পড়েন!
সংসারের কর্ম কোলাহলে যেন ধ্যানের গতি-স্রোত থেমে যায়
একদিন তিনি চলে গেলেন হীরা পর্বতের গুহায় নির্জনতায়
খাবার পাঠায় খাদিজা; আর তার ফেরার পথ চেয়ে বসে থাকে!
তখন তার বয়স চল্লিশ বছর, রমজান মাস
গভীর ধ্যানের মধ্যে একটা কণ্ঠের ডাক ভেসে আসে
‘মুহাম্মদ’, চোখ খুলে দেখে জিবরাইলের নুরে গুহা আলোকিত
চোখের সামনে নুরের অক্ষরে লেখা জ্যোতির্ময় বানি ভেসে উঠল
জিবরাইলের প্রচেষ্টায় নিরক্ষর মুহাম্মদের মুখ থেকে নিঃসৃত হলো
‘ইকরা-বিসমি রাব্বিকাল-লাযী খালাক.........’
[১.পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন ২. সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে ৩. পড়ো! তোমার পালনকর্তা মহামহিমান্বিত ৪. যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে ৫. শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতোই না ]
মহাসত্যের প্রথম উপলব্ধির বর্ণনা ভাষাহীন
ভোরের আলোয় তিনি খাদিজার কাছে ছুটে যান
প্রতি রাতে দরজার কড়া নাড়বার শব্দ শুনবে বলে
খাদিজা উৎকণ্ঠায় চেয়ে থাকে,আজ তার দরজায় কে কড়া নাড়ে?
খুলে দেখে মুহম্মদ কাঁপছে ভয়ে
কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন দুশ্চিন্তা নিয়ে
মুহাম্মদ খাদিজার কোলে মাথা রাখে, খাদিজা সাহস দেয়
সে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়।
সব শুনে খাদিজা যেন বিদ্যুতের শকে চমকে উঠল
তখনো মুহাম্মদ কম্বল মুড়ে পড়ে আছে, বিহ্বলতা কাটে নাই
বিচলিত খাদিজা দৌড়ে গেলেন বিচক্ষণ অর্কার কাছে
শুনে তিনি বললেন, ‘এ তো সেই ফেরেশতা’!
যে যুগে যুগে আল্লাহর মহান বানী নিয়ে এসেছে মানুষের কাছে
আরও শোনালেন সাবধান বানী, তার জীবনে আসছে দুর্যোগ দুর্দিন!
ওসব শোনার সময় নেই খাদিজার! শুভ সংবাদ দিতে হবে তাকে
তিনি আনন্দে দৌড়ে গেলেন মুহাম্মদের কাছে, শোনালেন অর্কার কথা।