গাঁয়ে গাঁ ঘেঁষে ছোট ছোট ঘরগুলো মিলে গড়ে উঠেছে বসতি
সেগুলো গ্রাস করতে একটু একটু করে বাড়ছে নদীর পানি
সেইসাথে বাড়ছে ভয় নদীর তীরের মানুষগুলোর,
হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে পানির তোড়ে গরু ছাগল ভেসে গেল
ঘরের মেঝেতে খুঁটি গেড়ে উঁচু বাঁশের মাচায় ঠায় হলো ঘর বাসীর।
হতাশার বেলাভূমিতে আশা উঁকি দেয়
কিন্তু সময় বয়ে আনে আরও বেদনা।
জমাট অন্ধকারে ঘুমের ঘোরে কোলের শিশুটি হারিয়ে গেল।
ঘুম ভেঙে মা দেখে খালি বিছানা
সর্বনাশা নদী তাকে নিয়ে গেছে।
জীবন বাঁচাতে সংসার পেতেছে ভেলায়
কোথায় ঠায় মিলবে কেউ জানে না,
অজানায় ভেসে চলে আর পিছন ফিরে চাই করুণ চোখে
ছোট ছোট সেই বসতিগুলো ছেঁড়া দ্বীপের মতো
কোনমতে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে জন মানবহীন, প্রাণহীন।
ঠাঁই মিলেছে উঁচু রাস্তায়,রেল লাইনে,স্কুল ঘরে
প্রকৃতির সাথে লড়াই করে ওরা হেরে গেছে
এইসব মানুষের জন্য
খবরের কাগজের কলমের ডগা দিয়ে রক্ত ঝরছে
--‘বাঁচতে হলে খাদ্য চাই।
বানভাসি মানুষের আবার পিঠটান করে দাঁড়াতে ত্রাণ চাই’।
ত্রাণের আশায় অভুক্ত মানুষের দল দীর্ঘ লাইনে
সামনে থরে থরে সাজানো সব ত্রাণের জিনিস
সেগুলোর দিকে করুণ ভাবে চেয়ে থাকে অসহায় দুর্বল মানুষ
দুপুর গড়িয়ে সভাপতির সাথে টিভি ক্যামেরা এলো
ত্রাণের উৎসব নাটকের শুটিং হবে; অভিনেতারা প্রস্তুত
এমপি চেয়ারম্যানের ঠোঁটের কোনে হাসি
ক্ষুধার্ত ও অসহায় মানুষেরা ছেড়ে দিল তাদের অধিকার।
সেইটুকু নিয়ে ত্রাণ দাতাদের গড়ে উঠল সম্পদের পাহাড়।