(বিঃদ্রঃ কবিতাটির নিচে প্রয়োজনীয় টীকা দেয়া আছে।)
আজ পৃথিবীর তখতে তখতে দানবের দল বসে,
মাতাল-নৃত্য করিছে নিত্য মজলুম-খুন শুষে।
সর্বহারার জান-মাল লয়ে কাড়াকাড়ি করে মরে,
দ্বন্দ্ব বাঁধিয়ে জাতিতে জাতিতে - স্বার্থ হাসিল করে।
কেঁপে কেঁপে ওঠে ধরাতল, শত জালিমের পদভারে,
সপ্ত আকাশ ভাঙিয়া পড়েছে পীড়িতের হাহাকারে।
ভয় পেয়ো না ক' বীর মুজাহিদ, ভাঙিয়া পড়ো না দুখে,
মাতাল দানব বেশিদিন আর র'বে না ধরার বুকে!
নির্যাতিতের অভিশাপে তার কপালে পড়েছে ছাই,
ঘুণ ধরিয়াছে গদিতে, ধসিতে আর বেশি দেরি নাই!
পথের আবর্জনা সম ওরা বাতাসে ঊর্ধ্বে ওঠে –
ক্ষণিকের তরে – চোখের পলকে পথের ধুলায় লুটে।
দম্ভে মাটিতে ঠেকে না চরণ, জানে ওরা ইতিহাসে-
কত জালিমের তখত-প্রাসাদ গিয়াছে ধুলায় মিশে?
কত ফেরাউন, কত নমরূদ মরেছে তাদের পাপে –
তখত, ক্ষমতা, সম্পদ লয়ে – নির্যাতিতের শাপে!
মুছিয়া গিয়াছে ধরাতল হতে কত কারূনের চিন্,
ধন-সম্পদ, তখত, প্রাসাদ ভূ-গর্ভে হল লীন।
কত কায়সার-কিসরার তাজ হল ধূলিলুণ্ঠিত,
নশ্বর এই মসনদে বসে তবুও গর্ব কত!
হতভাগা ঐ জালিমেরে কভু বাঁচাতে পারে না তবু –
তখত, ক্ষমতা, সম্পদে ওরা পূজা করে ভেবে প্রভু।
“চিরকাল র'বে মসনদে সে-ই” – ভাবে সে গদিতে বসে,
জানে না – হয়তো বধিবে যে তারে গোকুলে বাড়িছে সে!
নির্যাতিত ও মজলুমে গদি ধরে টান দেয় যদি –
প্রাণের ভিক্ষা তত নাহি চাহে, যত চাহে ওরা গদি!
খাবি খায়, তবু ওরা তখতের দাবী কভু নাহি ছাড়ে,
শয়তানে বুঝি মন্ত্রণা দিয়া নাচে শিরে – চড়ে ঘাড়ে!
বোঝে না অত্যাচারী চিরকাল রহে না ক' ক্ষমতায়,
আল্লার মারে ধূলিতে লুটালে 'হা' করে ঊর্ধ্বে চায়।
সত্য পথের বীর মুজাহিদ! ভয় নাই, নাহি ভয়,
সাম্য-শান্তি লক্ষ্য যাদের – নাহি নাহি পরাজয়!
দৈবচক্রে দৈত্য-দানব মাঝে মাঝে পায় জয়,
অবশেষে চির-কলঙ্ক হয়ে কালের পাতায় রয়।
ওরা কৌশল আঁটে – কৌশল আঁটে খোদা এইদিকে,
উত্তম পরিকল্পনাকারী কে বা আল্লার থেকে?
পর্বত-অটল রহিব – আসুক জয় কি বা পরাজয়,
জয়ী যদি হই, এক আল্লার মাহাত্ম্যের হবে জয়।
আল্লার রাহে যে বা যত লাঞ্ছিত হয় দুনিয়ায়,
পরকালে সে-ই আল্লার কাছে তত ভালবাসা পায়।
খোদার প্রেমের ঝরনা তাদের 'পরে ঝরে অবিরত,
কাতারবন্দি লড়ে তাঁর পথে সীসা-প্রাচীরের মত!
নিহত যদি বা হয় কেহ লড়ে প্রভু আল্লার পথে,
শহিদ হয়ে তাঁর চির-প্রিয় মেহমান হয় জান্নাতে।
হাশরের ময়দানে দেখে তাঁর অতুল মর্যাদায় –
জ্বীন, ফেরেশতা, নবী-সাহাবীরা জ্বলে মরে ঈর্ষায়।
ক্ষণিকের তরে কুফরের জয়ে পিছু হটিব না কভু,
বুঝিব মোদেরে মুসিবতে ফেলে পরিক্ষা করে প্রভু।
বিপদে হারায় ধৈর্য-সাহস – সে তো মুসলিম নয়,
হিমালয়-অটল ঈমান যাহার – তারে 'বিশ্বাসী' কয়!
কাপুরুষ যারা, জুলুমে যাদের শির উঁচু নহে কভু,
বেঈমান ওরা, কাফের – ওদেরে ভালবাসেন না প্রভু।
মুসলিম সেই – আল্লার 'পরে পূর্ণ যার ঈমান,
আল্লা ব্যতীত করে না কারেও ভয় – কোথা সেই প্রাণ?
ধিক! তারে শত ধিক!
খোদার রাহায় জিহাদ করেনি – কাফের! সে মুনাফিক!
উৎপীড়ন যে করে মজলুমে – নাহি ক' ধর্ম-জাতি,
উহাদের শুধু এক পরিচয় – “রাক্ষস” বলে খ্যাতি।
মানবজাতির মাথায় চাপিয়া ওরা প্রভুত্ব করে,
নৈরাজ্যের মেলা বসায় এরা তামাম বিশ্ব জুড়ে!
কাঙালের শেষ সম্বল কেড়ে দানবীয় সুখ পায়,
পাহাড় সমান সম্পদ গড়ে আরেক পাহাড় চায়!
সর্বহারা ও নিপীড়িত – কোনো ধর্ম-জাতির নয়,
তারা বঞ্চিত, তারা মজলুম – এই এক পরিচয়!
আল্লার কোনো জাতি নাই, তিনি নির্যাতিতের তরে,
যুগে যুগে দূর হয় জালিমেরা তাঁহার প্রবল মারে।
তাহাদের তরে দোযখে ভীষণ অগ্নিকুণ্ড জ্বলে –
আল্লার প্রিয় সৃষ্টি মানুষে দলে যারা পদতলে।
বেঈমান যত শাসকের দল ভাঙিয়া প্রতিশ্রুতি -
রক্ষক বেশে ভক্ষক হয়ে গিলিছে মানবজাতি।
স্বাধীন মানুষে দাস করে – বেঁধে হাতে পায়ে শৃঙ্খল,
যারা যত নিপীড়ন করে – তত অন্তরে দুর্বল!
অত্যাচারীর কদমে সালাম করে যে জুলুম সয়,
মনুষ্যত্বহীন দুইজনে – শয়তান পরিচয়।
খোদাপ্রদত্ত বলে যে জুলুমে নাহি করে প্রতিরোধ,
বোধজ্ঞান-হারা পশু ওরা, বিকিয়েছে মানবতাবোধ।
মুখ বুঁজে সহে জুলুম, জালিম সম অপরাধ তার,
ক্ষমা নাই তার এলেও দোযখ ঘুরে শতকোটি বার!
জুলুম যে করে, প্রতিবাদহীন মুখে যে জুলুম সয়,
আল্লার মারে উভয় শ্রেণি যুগে যুগে দূর হয়।
মানুষের অধিকার কাড়ে যে বা, কভু সে মানুষ নয়,
উৎপীড়ন যে করে, তার শুধু দানবের পরিচয়!
সর্বহারারে নিপীড়ন করে যারা অধিকার কাড়ে,
নির্যাতিতের অভিশাপে তার মসনদ ওঠে নড়ে।
শান্ত রয় এ পাপের ধরণী খোদায় শান্ত র'লে,
তামাম বিশ্ব ছাই হবে যদি খোদা ক্রোধে ওঠে জ্বলে!
সত্যের শিখা জ্বলে যার হৃদে – দুনিয়ার বুকে বীর,
'আল্লাহ' বিনে কারো সম্মুখে নত করে না সে শির!
এক আল্লারে ইলাহ ব্যতীত মানেনা কারেও প্রভু,
কুফরের আঘাতে প্রাণ নিভিলেও, নিভে না ঈমান কভু।
ঈমানের তেজ জ্বলে তত বুকে, যত সে আঘাত খায়,
যুগে যুগে হেসে প্রাণ দিয়া শত নির্জীব আত্মা জাগায়!
নব প্রাণ পেয়ে সে আত্মা হাঁকে হায়দরি হুঙ্কার,
বক্ষের ছাতি ঢাল করে চাহে রুখিতে সে অবিচার!
ওরা বিপ্লবী, ওরা বিদ্রোহী – যুগে যুগে দিয়ে প্রাণ –
আনে এ পাপের বিশ্বে নিখিল উৎপীড়িতের ত্রাণ!
বিপ্লবীদের জীবনের বিনিময়ে বিপ্লব আসে,
খুনে রেঙে তার, জাতির আকাশে মুক্তি-সূর্য হাসে!
মুসলিম সেই! - ফাঁসির মঞ্চে নির্ভীক হাসি হাসে,
প্রাণ-ভয় ভুলে অবিচারে যারা বিদ্রোহ করি' বসে!
'লুন্ঠিত মানবতা' দেখে হাঁকে ব্যাঘ্রের হুঙ্কার,
জালিমের কালো থাবা ভেঙে আনে মজলুমের অধিকার!
পদাঘাত হেনে ভাঙিতে চাহে যে জুলুমের শৃঙ্খলে,
অন্যায় দেখে শিরায় শিরায় যার দাবানল জ্বলে!
পুষ্পের মত কোমল যাহারা মজলুমানের তরে,
বজ্রপাতের মত আঘাত হানে যারা জালিমের শিরে!
খালিদের অসি সম জালিমের সমুখে ঝলসে ওঠে,
জুলুম-পীড়নে জ্বলন্ত অগ্নিগিরি সম পড়ে ফেটে!
অত্যাচারীর উদ্ধত শির ভাঙে যারা লাথি মেরে,
হাসিতে হাসিতে প্রাণ দেয় যারা নির্যাতিতের তরে!
বীর মুজাহিদ! উল্কার বেগে সমুখে এগিয়ে চলো –
দুর্গম পথে - পর্বত-সম বাধা সব ভেঙে ফেলো।
খোদায় পর্বত-অটল ঈমান, সবর হোক চিরসাথী,
নিত্য জ্বালিবে সূর্য-চন্দ্র আমাদের পথে বাতি।
নিরাশ হয়ো না বীর মুজাহিদ, বেশিদিন নাই বাকি,
নির্যাতিতের শাপে জালিমের গদিতে লেগেছে ঝাঁকি!
বৃক্ষ, যত সে বাড়ে - তার ঝড়ে ভাঙিবার ভয় তত,
যে যত জুলুম করে তার তত পতন ত্বরান্বিত!
মসনদে বসে যদি কেহ করে মসনদের অপমান,
অত্যাচারী সে! – খোদার হুকুমে যায় তার গর্দান।
মানুষের মনগড়া সে আইনে শান্তি আসে কি কভু?
শান্তি আনিতে বিশ্বে, কোরানে আইন দিয়াছে প্রভু!
স্বার্থের নীতি রচিয়া জালিম ইলাহের রূপে বসে -
নির্যাতিতের খুন খেয়ে তার অস্থিমজ্জা চোষে!
ভোগী-রাক্ষস! জালিম! – আজিকে হুঁশিয়ার! হুঁশিয়ার!
তখত-প্রাসাদ নির্যাতিতের ক্রোধে হবে ছারখার।
অত্যাচারী সে রাক্ষসদের রাজত্ব হবে শেষ,
বিশ্বে চলিবে আজ হতে ঐ এক সে খোদার আদেশ!
সাত আসমান বিদীর্ণ করি ধেয়ে আসে ক্রোধ তাঁর,
জালিমে মারিয়া আনিবেন খোদা মজলুমের অধিকার!
মানুষের 'পরে নিপীড়ন করে – আছে তার আছে ক্ষয়,
জালিমের গদি পৃথিবীতে কভু অবিনশ্বর নয়!
যুগে যুগে এই পৃথিবীতে ঘটে কুফরের পরাজয়,
সত্যের টুঁটি টিপে ধরে যারা, তাহাদেরি হয় লয়!
এক আল্লার ভয় করি শুধু – করি না কারেও ভয়,
আসুক আঘাত শত দিক হতে – মানিব না পরাজয়।
সত্য পথের দিশারী, এক সে সর্বশক্তিময়,
তাঁর পথে লড়ে শহিদ হয়ে মোরা করিব 'স্বর্গ’ জয়!
সত্য পথের সেনারা করে না পৃষ্ঠপ্রদর্শন,
মৃত্যু আসিলে প্রিয়া ভেবে বুকে জড়িয়ে করে বরণ!
উৎপীড়িতের তরে প্রাণ দেয় - তার সম কেবা হয়,
আল্লার রাহে প্রাণ দেয় - তার মৃত্যু মহিমময়?
আল্লার পথে মানুষের কল্যাণে হেসে দেব প্রাণ,
পীড়িতের তরে বিশ্বে আনিব শান্তির ইসলাম!
সাক্ষী থাকিবে চন্দ্র, সূর্য, আকাশ, তারকারাজি –
পথভ্রষ্ট কারা? কারা রাখে তাঁর পথে প্রাণবাজি!
মাখিব মেহেদী জালিমের খুনে মোদের দু'হাত ভরে,
আমাদেরি লোহু লিখিবে মুক্তি-বার্তা ভূ-তল জুড়ে!
সত্য পথের বীর মুজাহিদ! নাহি ভয়! নাহি ভয়!
হুঙ্কার দিক কুফর! – আসিবে শেষে সত্যের জয়!
মিথ্যের পর্বত যত বড় হোক - ধ্বসে হয় লয়,
সুন্দর পৃথিবীতে সত্যের নাহি ক্ষয়! নাহি ক্ষয়!
(টীকা/ব্যাখ্যাঃ
*) ফিরাউনঃ হযরত মুসা (আ) এর যুগের অত্যাচারী বাদশাহ। এই বাদশা'র উদ্ধত আচরণের মাত্রা এতই বেশি ছিল যে সে নিজ জাতির কাছে নিজেকে খোদা বলে দাবী করে বসে। হযরত মুসা (আ) তখন তার এই উদ্ধত আচরণের প্রতিবাদ করে তাকে আল্লাহর ব্যাপারে সতর্ক করলে ফিরাউন তাকে পাকড়াও করার নির্দেশ দেয়। হযরত মুসা (আ) তখন আল্লাহর নির্দেশে লোহিত সাগর পার হয়ে শামদেশে (বর্তমানে সিরিয়া) আশ্রয় নেন। লোহিত সাগর পার হওয়ার আগে হযরত মুসা সাগরকে লাঠি দ্বারা আঘাত করেন। আল্লাহর হুকুমে সাগরের বুকে প্রশস্ত ১২টি রাস্তা তৈরি হয়ে যায়। তিনি ও তাঁর অনুসারীরা সেই রাস্তা পার হয়ে অপর পাড়ে পৌঁছান।
এদিকে ফেরাউন ও তার দলবল মুসাকে ধাওয়া করে লোহিত সাগরের তীরে পৌঁছালে ফেরাউন সাগরের বুকে রাস্তা দেখে হতভম্ব হয়ে যায়। তখন সে কূটবুদ্ধির আশ্রয় গ্রহণ করে তার অনুসারীদেরকে ধোঁকা দেয়। লোহিত সাগরের বুকে রাস্তা দেখিয়ে বলে যে তার হুকুমে এই রাস্তা তৈরি হয়েছে। এরপর সে ও তার অনুসারীরা সেই রাস্তা অনুসরণ করে সাগরের মাঝামাঝি পৌঁছালে আল্লাহ রাস্তাশুদ্ধু তাদেরকে সাগরের বুকে ডুবিয়ে মারেন।
*) নমরূদঃ পৃথিবীর ইতিহাসে আল্লাহর সঙ্গে প্রথম ধৃষ্টতা প্রদর্শনকারী ও নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি চরম অত্যাচারী হিসেবে পরিচিত ছিল নমরূদ। আল্লাহকে শেষ করার জন্য আসমান অভিমুখে টাওয়ার নির্মাণ এবং নিজেকে প্রভু দাবী করার দুঃসাহস দেখিয়েছে এই জালিম। দীর্ঘ চারশ বছরের শাসনামলে সে পৃথিবীতে চরম পর্যায়ের ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছিল। অবশেষে আল্লাহ তা'লা শাস্তিস্বরূপ একটি মশা তার নাকে প্রবেশ করান। মশার অসহ্যকর জ্বালা-যন্ত্রণা থেকে নিজেকে বাঁচাতে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত পর্যন্ত করে। কিন্তু এতেও তার শেষ রক্ষা হয়নি। বরং জ্বালা-যন্ত্রণা আরো বেড়েছে। শেষমেশ এই হাতুড়ির আঘাতে মাথা ফেটে মৃত্যু ঘটে এই অত্যাচারী বাদশার।
*) কারূনঃ হযরত মুসা (আ) এর যুগেবেক প্রভাবশালী, অত্যাচারী ও ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিল কারূন। আল্লাহ পাক তাকে অগণিত ধনসম্পদ দিয়েছিলেন। কিন্তু এই ধনসম্পদ পেয়ে সে অহংকারী হয়ে আল্লাহকে অস্বীকার করে বসে। গরীব-মিসকিনকে যাকাত দেয়া বন্ধ করে দেয়। সে বলত – “আল্লাহর অনুগ্রহে নয় বরং আমি নিজ ক্ষমতাবলেই এই ধনসম্পদের মালিক হয়েছি। অতঃপর আল্লাহ তার এই অহংকারের শাস্তিস্বরূপ তার ধনসম্পদ ও প্রাসাদসুদ্ধু তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলেন।
*) কায়সার ও কিসরাঃ রোম ও ইরান – এই দুই সাম্রাজ্য রাসূল (স) এর যুগে দুই পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। রোমের সম্রাটদের বলা হত কায়সার, আর ইরানের সম্রাটদের বলা হত কিসরা।
রাসুল (সাঃ) যখন মক্কায় ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন, তখন মক্কার মুশরিক-কাফিররা সাহাবাদের এই বলে উত্যোক্ত করত যে, এরা নাকি রোম বিজয় করবে? এরা নাকি পারস্য বিজয় করবে? ওই দেখ দেখ রোম বিজয়ী যায়, পারস্য বিজয়ী যায়, ওই দেখ দেখ পাগল যায় .......ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এই বাপ-দাদার ধর্ম ত্যাগকারী, কথিত পাগলরাই মাত্র ২০-২৫ বছরের মধ্যেই একত্রে রোম-পারস্যের মত দুইটা পরাশক্তিকে ধ্বংস করে দিয়ে আফ্রিকা এবং হিন্দুস্তান, চিন ও রাশিয়ার সীমানায় ইসলামকে নিয়ে গিয়েছিল। তার কিছুদিন পরেই মাত্র ১০০ বছরের ভিতর মদিনা থেকে পশ্চিমে স্পেইন, পূর্বে হিন্দুস্তান (ভারতীয় উপমহাদেশ), চিনের অনেক অঞ্চল, উত্তরে রাশিয়ার অনেক অঞ্চল এবং দক্ষিনে আফ্রিকাকে পরাজয় করে সেখানে ইসলাম পৌঁছে দিয়ে ইসলামিক খিলাফত রাষ্ট্রকে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। ১৩০০ বছর ধরে সেই রাষ্ট্রকে পরিচালিত করে সবচেয়ে স্থায়ী রাষ্ট্র হিসেবে রেকর্ড গড়েছিল।)