নানার ঘরেই বেড়ে ওঠা
শৈশব থেকে কৈশোর,
নানার সাথেই হতো বেশী
আড্ডা-গল্পের আসর।
নানা মানেই নেইকো মানা
যা খুশি তা চাওয়া,
নানার হাতটি ধরে হেঁটেই
শত শত পাওয়া।
কথায় কথায় ছন্দ বলা
ছিলো নানার নেশা,
গুটিকয়েক লোকের সাথে
ছিলো ওঠাবসা।
নানার মুখের ছন্দ শুনেই
ছন্দের প্রেমে পড়া,
ছন্দের পিঠে ছন্দ দিয়েই
হাসিঠাট্টা করা।
নানা ছিলো বেজায় রাগী
স্বভাবে একগুঁয়ে,
কারো উপর রেগে গেলেই
থাকতো সে না খেয়ে।
পেটে যখন লাগতো ক্ষুধা
দিতো গালির বন্যা,
ইচ্ছা করেই জেদের বশে
শুরু করতো রান্না।
তরকারি ছাড়াই খেতো ভাত
লবণ মরিচ দিয়ে,
বকবক করতো সারাটা রাত
মনের দুঃখ নিয়ে।
চলে যাবো বাড়ি ছেড়ে
প্রায়ই হুমকি দিতো,
জামাকাপড় কাঁধে নিয়ে
রাস্তায় ছুটে যেতো।
পাড়ার লোকে শান্ত করে
আনতো ডেকে আবার,
নানী তখন গোমড়া মুখে
দিতো খেতে খাবার।
নানা তখন ধীরেধীরে
শুরু করতো খেতে,
রাগের কথা ভুলে গিয়ে
বসতো আড্ডা দিতে।
এভাবেই কেটে যেতো দিন
নানান খুঁনসুটিতে,
সুযোগ পেলেই নানা থাকতো
গানের তালে মেতে।
নানা-নাতি নামাজে যেতাম
জোরে জোরে হেঁটে,
নামাজ শেষে দাঁড়িয়ে থাকতাম
মসজিদের ঐ গেটে।
বহুদিন আর হয় না দেখা
নানার সাথে নাতির,
দুষ্টু মিষ্টি কথার ছলে
জমে না আর খাতির।
আজকের দিনেই নানা আমার
ছেড়েছিলেন ধরা,
নানার স্মৃতি চোখে ভাসলেই
ঝরে অশ্রুধারা।
দোয়া করি নানার জন্য
মহান স্রষ্টার তরে,
ভালো থাকুক নানার আত্মা
অন্ধকার ঐ ঘরে।
সবাই আমার নানাজানের জন্য দোয়া করবেন।
আর যাদের নানাজান বেঁচে আছেন
দয়া করে সময় দিবেন,
মজা করবেন, খেয়াল রাখবেন,
আর অনেক অনেক ভালোবাসবেন।