নরক থেকে আজ এক চিঠি পেয়েছি।
কিছু কংকাল আগুনে পুড়ছে।
কংকালের গায়ে নতুন মাংস জন্ম নিচ্ছে।
আবার সে দেহ পুড়ছে, কংকাল জ্বলছে।

ফুজিয়ামার অগ্নিকূপ এখনো নরকে মিলিত হয়নি।
নিশাম সেখানেই আছে।
নরক থেকে কিছু মানুষ তাকে ডেকেছিল।
সে নরকের পথ খোঁজ করেনি।
একাকী পুড়তে থাকা তার প্রিয় ছিল।
হয়তো পুড়তে পুড়তে নিঃশেষ হয়ে একদিন
সে সর্গের খোঁজ পেয়ে যাওয়ার আশা করেছিল।
সব নরকীয়ের সাথে পুড়তে থাকলে এ সুযোগ আর আসবে না।
আর নরকের বাসিন্দাদের কেনই বা সর্গের পথ দেখাতে হবে?
সর্গের পথ তো দাবি করে সর্গপানে অভিলাসী
প্রত্যেকটি পথ না জানা পথিকের দল।

নরকে আগুন জ্বলছে।
সে আগুনের কালিতেই আমার কাছে এসেছে চিঠি।
আমাকে ডাক দেয়া হয়েছে নরকের পানে
যেখানে অপেক্ষা করছে লাখো পূন্যবান
আর পাপীরা কাঁদছে এ চিঠি ছিঁড়তে না পারার কষ্টে।

আমি সর্গের পথ চিনি, নরকের পথ জানি,
তবুও নিশামের পথ শুধু আমায় আকৃষ্ট করে রাখে।
ফুজিয়ামার অগ্নিকূপে জ্বলতে জ্বলতে তার কংকাল
অবশেষে কি সর্গের সন্ধান পাবে,
নাকি একদিন এই অগ্নিধারা নরকের অগ্নিতে মিলিত হবে?
নিশামের মতো আমিও কিছুই জানি না।

চিঠির কোন উত্তর আমি দিতে পারছি না।
বিষাক্ত পৃথিবীকে মানিয়ে নিয়ে বেঁচে আছি।
তবুও একটা পথ আমায় বেছে নিতে হবে।
সর্গের পথ, নরকের পথ, অথবা নিশামের পথ!
নিশামের পথই ধরতে চেয়েছিলাম প্রতিবার।
তবে এ পথের কোন শুরু কিংবা দিক খুঁজে পাইনি কোথাও।
ছিল না কোন নকশা, আর আজও নেই কিছু।
ঘৃণিতের অভিশাপে এক সাজানো জীবনের আত্মহুতি
কে ই বা নকশা করে রাখে!
তাই আমার কোন পথের খোঁজ পাওয়া হয় না।

নরকের বার্তাবাহক এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
সে চিঠির এক জবাব নিয়েই এখান থেকে যাবে।
আমি চুপ থাকতে পারছি না,
আমি ফিরতি চিঠির পাতায় কিছু লিখতে পারছি না।
আমি অনর্গল কথা বলে যাচ্ছি।
অথচ যাদের বলছি,
তারা কেউ এর ভার নিতে সক্ষম না।
প্রতিনিয়ত কিছু অপাত্রে বক্তৃতা ঢালছি,
আর তারা ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে
যেখানে এসেছিল পাঁচ বছর আগে।
আমি সামনে যেতে পারছি না,
আমি পিছে ফিরতে পারছি না।
এক স্তম্ভিত কিশোরের ন্যায় পার হয়ে যাচ্ছে আমার যৌবন।
কোন মিছিলের মাঝে আমি নেই,
একাকীত্বের বরণও আমি করতে পারিনি।
শুধু নরকের চিঠির জবাব দেয়ার মোহে পার করেছি প্রতি মুহূর্ত।

দিতে পারিনি জবাব।
নিশাম আমাকে পথ দেখাতে পারেনি।
সর্গের পথচারীরা আমাকে ফেলে অনেক দূরে চলে গেছে।
সে পথ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
নরকে আগুন জ্বলছে।
যেতে পারি সেখানে নিজেকে পোড়াতে চাইলে।
আর না চাইলে কি বের হতে পারবো সেখান থেকে?
অথবা,
আটকাতে কি পারবো কাল সেখানে যাওয়া?