মেয়েটার চেহারায় তেমন লাবন্য ছিল না।
শরীরে কতটা আবেদন ছিল
তা কখনো ভেবে দেখিনি।
অন্তরের বিশুদ্ধতা পরিমাপ করার মতো
কোন পাল্লা ছিল না আমার কাছে।
মাঝে মাঝে নিজেকে কারো অন্তর্যামী
ভাবার স্বভাব ছিল বহুকাল পূর্বে।
তাকে দেখার বহু আগে
সে স্বভাব ধূলিসাৎ হয়ে যায়।

তবে কেন তার জন্য কবিতা লিখছি?
তার বাচনভঙ্গি, চলাফেরা, কিংবা সাজসজ্জা,
কোনোটাই তো আমায় আকৃষ্ট করার মতো ছিল না।
ছিল একটি কদম ফুল তার হাতে,
আর মাথায় ছিল এক কৃষ্ণচূড়া।
সে ছিল তাকিয়ে এক আয়নার দিকে
আর আমি তাকিয়েছিলাম মোবাইল স্ক্রিনে।
তাই সেভাবে তাকে দেখাও হয়নি।
এক নারীর দিকে দীর্ঘদৃষ্টি!
সে তো ধর্মে পাপ, আর সমাজে অভদ্রতা।

সমাজ বা ধর্মের সবকিছু পরিবর্তন করার ইচ্ছা
আমার নেই।
পরিবর্তনেই যে সুখকর পরিণতি আসে,
বাস্তব অভিজ্ঞতা আমাকে তার বিপরীত কথা বলে।
কোথায় সত্যিকার পরিবর্তন প্রয়োজন,
আর কোথায় তার সীমারেখা,
অনেক মহামুনি তা নির্ণয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
তবে আমি কিভাবে চূড়ান্ত রায় বলতে পারি?
শুনেছি, যার জ্ঞান যত কম,
তার জ্ঞান প্রকাশের প্রবণতা তত বেশি হয়।
মেয়েটির মাঝে তেমন কিছু ছিল না,
আবার অনেক কিছু ছিল,
আমি যা দেখতে পারি না,
অথবা খুব গভীর দৃষ্টিতে দেখতে থাকি
প্রতিনিয়ত।

সত্যি বলছি, আমি মেয়েটির প্রেমে পড়িনি।
তবুও তাকে নিয়ে কবিতা লিখছি।
আমি কখনোই কারো প্রেমে পড়িনি,
তবুও শত নারীকে নিয়ে কবিতা লিখেছি;
আজও লিখে যাচ্ছি।
কে বলেছে,
কবিতা লিখতে প্রেমে পড়া আবশ্যক?
তবে এই সমাজের ছোঁড়া অস্ত্রগুলো
গোলাপের কাঁটা ভেবে যে কবিতা লিখি,
তার জন্য কি আমায় প্রেমে পড়তে হয়েছিল?
গোলাপ কিংবা গোলাপের কাঁটা
কারো প্রেমে না পড়ে যদি কাব্য রচনা হয়,
তবে এক নারীকে নিয়ে কাব্য রচনায়
প্রেমের আবশ্যকতা আমি অস্বীকার করি।

আমি আজ তোমাদের ঘৃণা ও বিদ্বেষে জর্জরিত।
তবুও তোমাদের কাউকে আমি ঘৃণা করি না।
ভালোবাসি তোমাদের (বিশেষত নারীদের)
তা অকপটে স্বীকার করি।
জানি না এ পাপ কি না।
তবে আমি বিশ্বাস করি, পাপ করা অপরাধ;
তা স্বীকার করা দ্বিতীয় অপরাধ নয়।
আমি কতটুকু অপরাধী, তোমরাই ঠিক করে নিও।
আর আমায় মেয়েটিকে ভালোবাসতে দিও।
আমি তার প্রেমে পড়িনি,
তবুও তাকে ভালোবাসতে চাই।
কারন সে বিশ্বাস করে,
সে একজন নারী।