আমি জানি, আমার কবিতায় রাখা প্রশ্নগুলোর
উত্তর কেউ কখনো দেবে না।
প্রতিবার সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে
নিজেকেই তার পরের লাইনে লিখতে হবে।
নিজেকে কবি বলতে বারবার অস্বীকার করলেও
কবির কাছে রাখা প্রশ্নের জবাবে
বাধ্য হয়ে আমাকেই শুধু কবি সাজতে হবে।
শেষ কবে ভায়োলিন বাজিয়েছি ঠিক মনে নেই,
হয়তো আমার জন্মেরও বহু আগে সে দিনটি ছিল।
হয়তো তখন আমি কোরিয়া, জাপান বা মঙ্গোলিয়ায়
কোন দরবেশের আত্মায় ভর করে ছিলাম।
সেখান থেকে এখনও ভেসে আসে আনন্দ ও বেদনার
সব নিদারুণ কঠিন সুর। অবশ্য প্রারম্ভিক রাগ
আমার মস্তিষ্ক ফিল্টারিং করে ফেলে দিয়েছে।
যা বাকি আছে, তাতেই চলছে জীবন।
এ জীবন আর কত বাকি, ভাবতে ভাবতে একদিন
দেখা হলো এক মৃত্যুপথযাত্রীর সাথে।
সীমাহীন পাপে ভরা সে ব্যক্তির মৃত্যু হলো
অসীম পুণ্যে ভরা জীবনের সমারোহে, আর পরক্ষণে
জানা গেলো সে কতটা পাপের শিকার।
অথচ মৃত্যুর পূর্বেও লোকটি বারবার বলেছিল,
স্বীকারোক্তি ব্যতীত আমি কাউকেই ক্ষমা করবো না;
আর আমি যার কাছে অপরাধী,
তাকে স্বীকারোক্তি দেয়ার একটিও কি সুযোগ পাবো না?
সে মোট বায়ান্নটি স্বীকারোক্তি দিয়েছিল মৃত্যুর আগে,
শুধু দুইটি স্বীকারোক্তির সুযোগ পায়নি।
তাতেই বা কি! সে তার কথা রেখেছে।
সব পাপীকে সুযোগ দিয়েছে স্বীকারোক্তি দেয়ার।
কিন্তু কারো ছিল না সৎ সাহস, তাই
বারবার তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ঠিক আজকের মতো।
তার মৃত্যুতে কারো কোন প্রশ্ন ছিল না।
তবে আমার জীবনে যত প্রশ্নের ধাঁধা ছিল,
তার অনেক সমাধান এসেছে সেখানে।
আমার কবিতার শব্দগুলো সেখানে ভেঙ্গে গেছে
আর প্রতিটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়েছে ভূলুণ্ঠিত;
শুধু বাঁচিয়ে রেখেছে তার প্রতিটি বিষ্ময়।
তাই আমি আর কোন কবিতার মাঝে প্রশ্ন রাখিনি,
আর কখনো কারো কাছে ভায়োলিন শুনতে চাইনি,
আর বাজাতে চাইনি কোন অস্পৃশ্য সংগীত
যেখান থেকে দুই চোখে জ্বলে ওঠে দাবানল,
অথবা দুই হাত খুঁজে নেয় অগ্নিমশাল।
আজ আমার কবিতারা সেই মশালে জ্বলা অগ্নিশিখা
লাভ করেছে কিভাবে, সে প্রশ্নও রাখব না।
কারন আজ আমার করা অনেক প্রশ্নই জমে গেছে।
আরও একটি অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর
সন্ধানের নামে পুনরায় ক্লান্তির শ্বাস নিতে চাই না।
তার চেয়ে বরং কবিতার গতিপথ
আজ পৃথিবীর ন্যায় নিজ ধারাতেই থেকে যাক!