কোথায় ছিলাম, কোথায় এলাম
আজব শহর বাসে,
কেউ কাঁদিছে জীবন যুদ্ধে
তাই দেখিয়া আজব মানুষ
অট্টহাসি হাসে-
হাজার মানুষ হাত তালি দেয়
একের সর্বনাশে।

হাজার মানুষ হাজার রঙে
গড়ছে দালান কোঠা,
অসহায়া লোক
মরছে ভাগারে ভুখা।
বস্তিবাসী, গরীব মানুষ তুষ্ট
দু'মুঠো ভাতে
তাই খুজিয়া হচ্ছে তারা
হন্ন দিনে-রাতে।

দেখেনা কেহ এই শহরে
নিত্য সোনালী ঊষা,
কালের করাল গ্রাসে আজ
উষ্কখুষ্ক প্রকৃতির রূপ
শ্রীহীন এই নগর মাঝে
শুধুই অর্থ নেশা।

প্রভাত আলোর উঁকির সাথেই
ছুটছে টাকার পিছে,
হায়রে আজিকার শহুরে আদম
সুখ খুঁজিছে কোথায় কিসে!!
নশ্বর জীবে নাচার দশা
বিশ্বে সর্ব দেশে।

সকাল সাঁঝে আপন কাজে
রয়েছে সবাই ডুবি,
এই শহরে নাই কোথাও
হৃদয়ে হৃদয়ে মেকি শূন্য
প্রীতি।
হারিয়ে যাচ্ছে হৃদয় থেকে
আপন জনের স্মৃতি।

কাজের তাড়নায়, হাজার যাতনায়
সকল মানবে উঠেছে নাভিশ্বাস,
নাই কোথাও এই শহরে
কোমল বায়ু, প্রশান্তির
নিঃশ্বাস ;
সুস্থ জীবনে শ্যামল প্রকৃতি
এসেছে বিশ্বাস।

পথের ফকিরে জিগায়না কেউ
আপন করিয়া, মমতা ভরিয়া ডাকি-
কেমনে চলছে জীবন তাহার
কোথায় যে তার সাকিন,
লইতে চাহেনা কেহই দুঃখের
একটুখানি ঋণ।

বৃথাই এখানে মানবতার গান
বৃথাই সর্ব মমতার ম্রক্ষণ ;
বুলায়না তো পরশ এখানে কল্প
তরু,ফুটিয়া ওঠেনা ভ্রান্তি শূন্য
জীবন কারু।
মানুষে মানুষে মিথ্যে দম্ভ করি
জীবন করেছে দুরি।

দিবা নিশি দিক বিদিকে
ছুটছে মটর যান,
অসীম আওয়াজে শ্রান্ত দেহ-মন
ধরণী নরক সমান;
কোলাহলে,নানান কলের
কর্কশেতে
যাচ্ছে অকালে প্রাণ।

এখানে জীবন ঘড়ির কাটা
শুধুই চলে মিথ্যে রঙের ছটা
দুর্গন্ধময়, ময়লা কটা;
কৃত্তিমতার কৃত্তিক আড়ালে
ঢাকিছে সজীবতা;
ঢাকিয়া গেছে সাচা
তবুও কষ্টে বাঁচা।

আজিকা নগরে সন্ধ্যা লগনে
নানান রঙে, নানান ভাবে
চলে ঘরমুখো মানুষের ঢল,
শত মনভাবে,শত ব্যস্ততায়
চলে দিবস যাপন;এটাই
গতিময় কাল!!

সাঁঝের মায়ায় দোলেনা হৃদয়
দোলেনা নিয়ম কাঁটা ;
চলেনা এখানে পাখির ডাকা-
ডাকি
শুধুই যে যার মত থাকা।
কে খেয়েছে, খায়নি কে-বা
হয়না এখানে দেখা।

গাঁয়ের মত অন্ধকারে পড়েনা
শহর ঢাকা,
প্রদীপ আলোয় উদ্ভাসিয়ে
চলছে জীবন চাকা;
কেউ গুনিছে কোটি টাকা-
কারো পকেট ফাঁকা।

নাই কোথাও প্রকৃতির পরশ
পড়েনা চোখে চাঁদনী রাতের রং,
যায়না দেখা দোয়েল,শালিক,
ময়না,টিয়ার
ফুড়ুৎ ওড়ার ঢং;
যেন সব মেশিন মানব
হৃদয়ে পড়েছে জং।।