“ভিতরের ভাবনার চিরন্তন রূপ কবিতা। যারা কবিতা লিখছেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি আমি বিনীতভাবে শ্রদ্ধাশীল। যারা কবি, কবিতা লিখছেন, তাদের জীবনবোধের অপূর্ব কারুকাজ আমাকে বিস্মিত করেছে। কত ভিন্নমুখী ভাবনা, দেখার সৃষ্টিশীল দৃষ্টিভঙ্গি, পরিণত অভিজ্ঞতা সব কিছুই আমাকে পুলকিত করে।
আমি মানুষকে নিয়ে লিখি। কারণ মানুষের ভিতরটাতে আমি প্রবেশ করতে চাই। বিচিত্র মানুষ। ভিতর আর বাহিরটা যখন কবিতার দর্শনবোধ থেকে দেখা মেলে, তখন মানুষকে চেনা যায়। কখনো সেটা আনন্দের, কখনো কষ্টের। যখন ভিতর আর বাহিরে এক দেখি, তখন গর্বে বুক ভরে ওঠে।
এখন খুব কম লোকই এমন আছে। বেশিরভাগ মানুষের ভিতর আর বাহিরে ভিন্ন সত্ত্বার বসবাস। মানুষগুলো হয়তো বুঝেনা কিন্তু আমার ভাবনা আর অদৃশ্য ভিতরের রূপটা যখন বেরিয়ে আসে তখন বিব্রত হয়, লজ্জায় আর ঘৃণায় মুখটা নিচু হয়ে আসে। এমন মানুষ তো আমরা চাইনি। যে ভাবছে নিজেকে খুব চালাক কিন্তু তার ভিতরের সত্ত্বা বলে দিচ্ছে সে কতটা নির্দয়, বোকা কিন্তু অসহায়।
পৃথিবীটা চলছে, সময়ও চলবে আর মানুষের হয়তো ভিতর-বাহির একসময় স্বার্থপর জীবনকে বেছে নেবে। কিন্তু তখন তো বিশ্বাস আর আশা বেঁচে থাকবে। যেমন বেঁচে আছে প্রকৃতি, জীবন আর মরণ।
পাপ আর পাপী হয়তো একদিন আলাদা ছিল, এখন তো এক ও অভিন্ন হয়ে গেছে। যেমন জীব আর জড়ের মধ্যে কোনো ব্যবধান নেই।
সকল মানুষ আমার কাছে সমান। মানুষ লেখক বা কবি হয়না, জীবনবোধ তাকে কবি বা লেখক বানায়।
সকলের প্রতি শুভকামনা। লেখা চলুক অবিরত ধ্রুব তারার মতো, শব্দের জাদুকরী গতিতে। কারণ কবিদের কলম থামাতে নেই। যদি থেমে যায় তবে মানুষ হারিয়ে যাবে। সময় তার গন্তব্য হারাবে। আর প্রকৃতি ধূসর হয়ে যাবে। আমি হয়তো হাসি কিন্তু সে হাসির পিছনের কান্নাগুলো কাউকে দেখাই না। কারণ মেকি ভালোবাসা আর কৃত্রিম মানুষ আমার পৃথিবীর বাসিন্দা না।”