এক : একটা মানুষ বিয়ে করেছিল
বিয়ের রাতে বউটা আত্মহত্যা করলো
সকালে যখন দরজাটা খোলা হলো
তখন দেখা গেলো বউটা বেঁচে আছে
আর মানুষটা মরে গেছে
কেন এমন হলো.............
কেউ জানেনা শুধু মরা লোকটা জানে
কিন্তু সে আর পৃথিবীতে নাই
বউটা এখনো আছে তবে ফাঁসির দড়িটা
আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি |
দুই : লাশকাটা ঘরের এক কোণে দীর্ঘ সময় ধরে
মাথায় হাত দিয়ে বসেছিলাম
আমার খুব চেনা একটা লোকের অপঘাতে মৃত্যু হয়েছিল
ময়না তদন্তের জন্য ডাক্তার মর্গে গেলো
দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে অপক্ষা করছি
ময়না তদন্তের রিপোর্টের জন্য
কিন্তু ডাক্তার সেই যে ঢুকেছে আর বের হয়ে আসেনি
তবে আজ আমার দিকে তাকালাম
আমার কংকালটা ছিল
কিন্তু দেহে কোনো স্পন্দন ছিলোনা
এখন ভাবছি আমার চেনা লোকটা আমি ছিলাম
না অন্য কেউ |
তিন : রাতের সাথে দিনের কোনোদিন দেখা হয়নি
কিন্তু দুজন দুজনকে দেখার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছে
আজ তাদের দেখা হলো কিন্তু কেউ কাউকে দেখতে পেলোনা
কারণ রাত আর দিন রোড একসিডেন্টে চিরদিনের মতো
চোখ হারিয়েছিল
এখন রাতও কাঁদেনা দিনও হাসেনা
কিন্তু তাদের ছেলে মেয়ে দুটো হাসে আর হাসে
মেয়েটার নাম রেখেছে চাঁদ
আর ছেলেটার নাম রেখেছে সূর্য
তবে চাঁদ সূর্যও একে অন্যকে এখনও দেখেনি
হয়তো অন্য কোনো ভুবনে তাদের দেখা হতেও পারে
তবে ততো দিন পৃথিবী থাকবে কিনা কে জানে |
চার : একটা মেয়ে একটা ছেলেকে প্রাণের চেয়েও
বেশি ভালোবাসতো কিন্তু ছেলেটা মেয়েটা খুব ঘৃণা করতো
মেয়েটার যেদিন বিয়ে ঠিক হলো
ছেলেটা সেদিন আত্মহত্যা করলো
কিন্তু কেন ?
কেউ জানেনা শুধু মেয়েটা জানে
মেয়েটা এখন স্বামীকে নিয়ে খুব সুখে ঘর সংসার করছে
তবে সে যে ছেলেটাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মেরেছিলো
তা এখনও কেউ জানেনা
হয়তো জানবেনা কোনোদিন
কিন্তু মেয়েটার বিবেক এখনো নির্জন রাতে
দেহ থেকে বের হয়ে ছেলেটাকে খুঁজে বেড়ায় |
পাঁচ : একটা ছেলের একটা মেয়েকে খুব ভালো লেগেছিলো
কিন্তু মুখ ফুটে কখনো সে তা মেয়েটাকে বলতে পারেনি
মেয়েটার মা একদিন ছেলেটাকে ডেকে বললো
আমার মেয়েটার সাথে তোমার বিয়ে দিতে চাই
ছেলেটা খুব খুশি হলো
খুব ধুম ধাম করে বিয়ে হলো
কিন্তু বাসর ঘরে যে মেয়েটাকে সে দেখতে পেলো
সেটা তার ভালো লাগা মেয়েটা ছিলোনা
ছেলেটা ভেবে কোনো কুল কিনারা পেলোনা
তবে ঘুম থেকে সকালে উঠে যে মেয়েটাকে তার পাশে
বউয়ের সাজে দেখতে পেলো সেটা ঐ ভালো লাগা মেয়েটাই ছিল
কিন্তু মেয়েটার তখন জীবন ছিলোনা
বিষে সারা শরীর নীল হয়েছিল
ছেলেটা এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়
মেয়েটাও দিন শেষে রাতে আসে
আর স্বপ্ন দেখিয়ে চলে যায়
কোথায় ?
কেউ জানেনা
জানবেনা কোনোদিন |
ছয় : একটা দোকান থেকে ছেলেটা শখ করে
একটা ঘড়ি কিনেছিলো
ঘড়িটা অদ্ভুত ছিল
সেখানে সময়, ঘন্টা, মিনিটের কাটা ছিলোনা
কোনো ডিজিটাল ডিসপ্লেও ছিলোনা
কিন্তু একটা জিনিস ছিল যা ঘড়িটাকে
অন্য ঘড়ি থেকে আলাদা করেছিল
তা হলো
ঘড়িটার মালিক এক সময়ের অত্যাচারী রাজার ছিল
একদিন এক চোর ঘড়িটা চুরি করেছিল
চোরটা ধরা পড়লে তার যখন হাত পা কাটা হচ্ছিলো
তখন ঘড়ির কাঁটাগুলোও ভেঙে পড়েছিল
এখনো চোরটা বেঁচে আছে
সে এখন ঘড়ির কাটা দিয়ে নিজের হাত পা বানিয়ে শহরে শহরে ঘুরছে
আর রাজার কোনো খোঁজ এখনো মেলেনি |
সাত : আমি একটা নীল চাদর কিনেছিলাম
একদিন খুব বাতাসে আমার প্রিয় চাদরটা উড়ে গেলো
অনেক খুঁজলাম কিন্তু কোথাও পেলামনা
একদিন এক অপরাধীকে দেখলাম পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে থানায়
নিয়ে যাচ্ছে
তার গায়ে চাদরটা দেখলাম
দৌড়ে চোরটার কাছে গেলাম
চাদরটা তার গা থেকে খুলতেই দেখলাম
সেখানে অনেকগুলো পাপী মানুষ
যারা আমাকে একদিন অপরাধ না করলেও পাপী বানিয়েছিলো
চাদরটা তাদের বিচার করেছে
কারণ চাদরের কোনো প্রাণ নেই মন নেই
মানুষের মন প্রাণ আছে বলে তা কখনো সঠিক
বিচার করতে পারেনা |