নাটাইটা সুতোয় জড়িয়ে
উড়াচ্ছিলাম ঘুড়ি
খোলা আকাশে,
নাটাইটা হাতে আমার
যখন ইচ্ছে সুতো ছাড়ছি
যখন ইচ্ছে গুটিয়ে নিচ্ছি
যখন ইচ্ছে হেচ্কা টান দিচ্ছি
যখন ইচ্ছে থামিয়ে রাখছি
আমার মতো করে
ইচ্ছামতো
যা ইচ্ছে তাই তার মতো,
হঠাৎ মাথাটা কেমন যেন
কিলবিল করে উঠলো
মনে হলো আমি পরাধীনতার
শিকল পড়াচ্ছি,
একটু অদ্ভুত হয়তো
মনে হতে পারে, একটু
অনেকটুকুও
কিংবা কিছুইনা,
পরাধীনতা এমনই
মনে হবে নেই
অথচ জালের মতো
ছড়িয়ে আছে সর্বত্রই
ভিতরে বাহিরে
নিঃশব্দে,
আচ্ছা আগের প্রসঙ্গে
ফিরে আসি,
ভাবছেন, আমি
কেমন করে?
পরাধীনতাকে আছি লটকে !
একটু ভাবুন,
নাটাইটা সুতোকে বেঁধেছে
পরাধীনতায়
সুতোটা ঘুড়িকে বেঁধেছে পরাধীনতায়
আর নাটাইটার নিয়ন্ত্রণ
আমার হাতে নিয়ে
পুরো পরাধীনতাকে ষোলকলায়
পূরণ করতে
রাজা হয়ে উঠেছি আমি
অবলীলায়,
মনে হচ্ছে আমি,
অথচ সেখানে আমার আমি'র
কোনো অস্তিত্ব আছে কি নাই,
সেটা হয়তো একটা রিসার্চ
একটা ভঙ্গুর মনস্তত্ব
যেটা ফিলোসফির মাথায়
ডিগবাজি খায়
জীবিত কি মৃত
সেটা মাখামাখি করে
আগুনের উত্তাপে ঝলসিত
আলকাতরায়,
কি অদ্ভুত পরাধীনতা
একটা ঘুড়ি তাকে ঘিরেই
এতো পরাধীনতা
এতো নিয়ন্ত্রণ
ভাবা যায় !
ভাবতে গেলেও হোঁচট খেতে হয়,
কার মতো করে
সেটাও তো জানিনা
কারণ অজানাটাই তো একধরণের
পরাধীনতা,
আচ্ছা আমি ভাবছি
আমার হাতে পরাধীনতার
পর পরাধীনতার সুতো
অথচ খুঁজছি
কার হাতে পরাধীন
আমি?
আমি? সেটাও অজ্ঞাত,
আবার আমিও কি জানি
কে আমার হাতে পরাধীন,
হয়তো অজ্ঞাত
কিন্তু পরাধীনতা চারপাশে
কি অদ্ভুতভাবে বিরাজিত
কিভাবে সেটাও
হয়তো সেটা দৃশ্যমান নয়
অদৃশ্যমান
কিন্তু অনেক বেশি শক্তিশালী
এই অদৃশ্য সুতোটা ঠিক কোথায় গিয়ে
শেষ হয়েছে, কোথায় গিয়ে ঠেকবে
তা জানাটাও খুব কঠিন
হয়তো অসাধ্য
হয়তো সেটা একান্ত বাধ্যগত
নয়তো অবাধ্য |
মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছি
ভাবছি
সারা পৃথিবীতে এতো মানুষ
বলছি স্বাধীন
অথচ কতটা স্বাধীন
নাকি সবটাই এমন পরাধীন
কে জানে, কে বুঝে
জানা-অজানার, চেনা-অচেনার
মাঝেই একটার পর একটা
পরাধীনতা
আঁকড়ে পরে আছে মানুষ
অথচ বোকার মতো চিৎকার
করে বলছে
আমি স্বাধীন, আমি স্বাধীন
কি জানি হয়তো সবটাই
একটা রঙ্গমঞ্চ
সবটাই অভিনয়
চারপাশের অদৃশ্য সুতো
সুতোয় বাধা সুতো
নিয়ন্ত্রণে বাধা নিয়ন্ত্রণ
অথচ কেউ জানেনা
কে কার হাতে বন্দি
পরাধীন
পর্দার সামনে
পর্দার পিছনে
দৃশ্যমান
অদৃশ্যমান
দাসত্ব
নাকি, অনুগত
কি জানি সবটাই
হয়তো আহত
কিংবা নিহত |
উদ্ভট চিন্তা কোনো মানে নেই এর
কিন্তু এর গভীরতা কতদূর
সেটা সমুদ্রের গভীরে
তলিয়ে যাওয়া না পাওয়া
একটা মানুষের দেহের মতো |