মামার বাড়ি রসের হাড়ি শুনছি আমি ঢের
সেই রসেরি স্মৃতিগুলো টানছে আজো জের।
মামার দেশে সবাই মামা, নানা, খালা, নানী
চাচা-চাচী, ফুফু তো নেই নেইতো এমন জানি।
সবার ভালোবাসা ছিল মামার বাড়ির দেশে
তাদের ভালোবাসার কথা সদাই ওঠে ভেসে।
বড়মামা, মেজমামা, ছোটমামার আদর
নানীর কাছে ভালই ছেলে নানার কাছে বাঁদর।
সারাক্ষণ তো গাছে গাছে এ পাড়া ও পাড়া
ঘুরতাম সদা নানার ডাকে দিতাম নাতো সাড়া।
ধমক দিত মারও দিত, দিত মোচরায় কান
পড়াশোনায় ভালো বলে বাঁচছিল যেন প্রাণ।
কিন্তু বেজায় আপদ হল বাইয়া হলাম দেখি
বা-হাতেতে সকল শক্তি, বা-হাতেতেই লিখি।
দারুণ বকা কানমলা ভাই নানার খেলাম কত
এসব খেয়ে ডানহাতেতে ভালই লেখা হত।
কষ্ট হত বেজায় লিখতে হঠাৎ ডানহাতে,
মাঝে মাঝেই ডানহাত বা-হাত গুলায় যেত তাতে।
আশরাফ স্যার ছিল মোদের বাংলা ক্লাস নিত
পড়ার চেয়ে ছাত্রদেরে বেজায় লিখতে দিত।
কালো বোর্ডে সাদা চকে লিখতেন তিনি বেশ
তার সাথেতে পাল্লা দিয়ে করতে হত শেষ।
ডানহাতেতে এত দ্রুত কেমনে লিখি ভাই
পিছিয়ে পড়ি বারে বারে বোর্ডের পাণে চাই।
হঠাৎ দেখি স্যারের যে হাত আমার সে হাত নয়
তবে কিরে বা-হাত ডানহাত আবার গেল গুলায়।
স্যারের যে হাত আমার সে হাত দারুণ লিখি এবার
স্যারের সাথে সাথেই লেখা করে দিলাম কাবার।
ছুটি পরে বাড়ি এসে নানার কাছে বসি
সে হাতেতেই লিখছি দারুণ মনে অংক কষি।
হঠাৎ করেই কানের লতি ঊঠল বেজায় জ্বলে
ধমকে নানা বলল আমায় 'বামহাত কোন ছলে।'
কান্না কান্না মুখটা করে বললাম রেগে মেগে
''ডানহাতেই তো লিখছি আমি মারেন কেন রেগে?"
বলল নানা, ''গাঁধা কোথাকার! এইটা কী ডানহাত?
বামহাত ডানহাত চিনিস না তুই আবার করিস বাত।''
বলনু আমি এবার কেঁদে, ''এমন কেন করেন?
লিখছি আমি স্যারকে দেখেই এবার আমায় ছাড়েন।
আশরাফ স্যার এই হাতেতে বোর্ডে লেখেন দ্রুত
তারে দেখেই শিখছি আমি তারই মনোঃপুত।"
ঘাবড়ে গিয়ে চুপটি নানা ভাবল মনে ক্ষণ
তবে কী ভুল, তারই হল লজ্জ্বা ভরা মন।
মুচকি হেসে আসল মামা বলল, ''আরে বোকা
আশরাফ স্যার নিজেই বাইয়া খাইছিস তুই ধোঁকা।''
নানা তখন রাগী চোখে তাকায় যেন সেই
বলনু আমি, ''স্যারেরি দোষ, আমার দোষ তো নেই।''
সেই থেকে আর বামহাতেতে, লেখা যে হয় না
ডানহাতেতে লিখছি তবুও বাইয়াই ঠিকানা।
বামহাতেতে শক্তি বেশি বামহাতে সব কাজ
খাওয়া-লেখা ডানহাতেতে নিত্যই চলে আজ।
নানাটা আমার, চলে যে গেছেন না ফেরারি দেশে
তারই লাগি হাজার দোয়া বেহেস্ত পাবার আশে।