আমি পড়তে এসেছি মা।
আমি বাপের বড় মেয়ে।
এই ঢাকা শহরে, পড়েই যাচ্ছি।
সেই প্রথম দিনের স্বপ্ন বুকে ধারণ করে আছি।
আহা! সেদিন ছিল মনোমুগ্ধকর।
তখন বইমেলা চলছিল। রঙ বেরঙের মোড়কের বই।
রঙ বেরঙের সাজ। টি এসসির মোড়ে কত সমাগম।
আহা! যেন নিত্য মেলা।
পিতা-মাতা পরিবার ছেড়ে এই অনেক দূরে
পড়তে এসে নিত্য মেলার ভীড়ে-
কেন যেন মনে হলো আমি একা। বড্ড বেশি একা।
কত বন্ধু হলো, বান্ধবী হলো-
কত পড়া হলো, কিন্তু আমি-
রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে আমি-
বাপের বড় মেয়ে আমি।
কদিনই বা বাপে আসতে পারে ঢাকায়।
কদিনই বা নিতে পারে খোঁজ।
যারা দু একজন নিতো ,ও তারা তো কাজিন।
রক্ষণশীল এ সমাজের বন্দীদশায়
তারা বন্ধ করল আসা।
ফোনে যোগাযোগও কমে গেল।
আমি একলা একটা মেয়ে
একলা একা এই ঢাকা শহরে
আশে পাশে আমারি মত আরো অনেকে-
আছে অনেক লোভাতুর চোখ
সব কাটিয়ে দৈন্যতায় আর-
কত ভুগব বলো।
আমি যেন দিন দিন রবীন্দ্রনাথের সেই ফটিক হয়ে যাচ্ছি।
ও হো! ফটিক নয়, ফটিকা হবে যে।
শুধু মেয়ে বলে আমি অনেক কিছুই পারি না।
আমি অনেক কিছুই পারি না।
অথচ আমি বাপের বড় মেয়ে।
কত দায়িত্ব কাঁধে ভর করে আছে
পাহাড় সমান হয়ে।
তবুও আমি যে হাল ধরেছি
আমার জীবন সংগ্রামের এই হাল
আমি ছাড়ব না। পণ করেছি। ধরে থাকব শক্ত হাতেই।
আমি সহিষ্ণু মেয়ে। পৌঁছে যাবই একদিন আমার সেই লক্ষ্য চূড়ায়।
ততদিন শুধুই অধীরতা, কষ্ট সহিষ্ণুতা পরিশ্রমের পাহাড়।
আমি উৎরাতে চাই।
হে বিভো। সে শক্তি কি আমায় দিবে না তুমি।