দুঃস্বপ্নের ঘোরে
ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলাম,
কে যেন বলছে,
ওই যে কী? ওই যে কী?
সময় কত!
হাত ঘড়িটা হাতে নেই,
মন বলছে,
"জানালার ফাঁকে হাত ঢুকিয়ে,
কেউ ঘড়িটা নিয়ে নিছে! "
মোবাইল!
মনে হলো, "চুরি হয়ে গেছে!"
বুকের ভেতর ছটফট করছে,
পুরো রুমটাতে যেনো
"আজরাইল" শ্বাস নিচ্ছে।
হাতড়ে ফোন পেলাম,
দেড়টা বাজে,
গহীন রাত!
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে,
ল্যাম্পপোস্টের আলো পড়ছে জানালায়।
পাশের ছাঁদে জমে থাকা পানি
কারো "চোখের জল" মনে হচ্ছে ।
উহ! অসহ্য।
জানালার গ্লাস টেনে দিলাম।
বুকের ধড়ফড়ানি কমেনি।
হেঁটে হেঁটে বেলকনিতে গেলাম।
দূরে দু'জন নারী-পুরুষের কণ্ঠ শুনছি।
জীবনের "জীবিকা" বিকিয়ে চলছে।
নাহ! কষ্টে বুক ফেঁটে যাচ্ছে।
আকাশের কান্নায়
পুরো পৃথিবী ছ্যাঁতছ্যাতে,
গলির মাথায় কুকুরের চিৎকার,
পুরো রাতটা মহাজাগতিক,
আমার শরীরের বল পড়ে যাচ্ছে,
চোখে মুখে পানি ঢেলে নিলাম।
আহ! তবুও হৃদপিণ্ড থামে না,
মৃত্যুর গন্ধ নাকে আসছে,
এত আরামের বিছানা,
আপনজনের সাথে রাত কাটাচ্ছি,
অথচ, একটি দুঃস্বপ্ন!
আচ্ছা, বরষায় কবরে পানি ঢুকে?
তারা কেমনে শুয়ে আছে?
নাহ! আর পারছি না।
ওজু করে নিলাম,
ছেলেটা বাবা..বাবা... বলে ডাকছে,
পাশে নেই তাই!
জায়নামাজে বসলাম,
ওর মাথার কাছে!
মন চাচ্ছে, সবাইকে ডেকে দিই,
ওদের সাথে কথা বলি।
মনে হয় এটাই শেষ ক্ষণ,
পৃথিবীতে আর থাকবো না।
একে একে ছেলে-মেয়ে সকলের
মাথায় হাত দিলাম,
আমিহীন ওদের পৃথিবী কল্পনা করলাম।
আল্লাহর কাছে বললাম,
"তোমার রহমতের দরিয়ায়
ওদের অবগাহন করে দাও,
বাকি জীবন;
তোমার সান্নিধ্যে রেখো তাদের।"
আচ্ছা, ওরা আমাকে কতদিন
মনে রাখবে?
আমার কবরের কাছে কতদিন যাবে?
একটু দোয়া করবে?
আমি কী করছি?
পুরো রুমে অন্য আরেক জনের শ্বাস পাচ্ছি,
নিশ্বাস কেউ কেড়ে নিবে!
গলা আটকে আসছে,
কাউকে ডাকলাম না,
ওদের ঘুমের ব্যাঘাতকারী হবো না।
একটি দুঃস্বপ্ন!
আমাকে বাঁচতে দিবে না।
আহ! জীবনটাই দুঃস্বপ্ন!
কবে বাস্তবতায় ফিরবো?
দুঃস্বপ্ন
___আহসান বিন ইসহাক
______রাত ২:৫০