বড় আর হলাম কই!
শুধু বয়সে বাড়া, আকারে বাড়া,
প্রকারে বাড়াই যদি বড় হওয়া হত,
তবে কত কিছুই তো কত বড়—
অকারণে, অযথা, বিরক্তিকরভাবে।
কথাতেই আছে গাছ পাথরের বয়সের
ইয়ত্তা নেই। অমন বড় হওয়াই কি
কাম্য ছিল!
অথচ চারিদিকে কত ছোটমি, নীচতা,
হীনতা, দীনতার মাঝে বড় বড় আকার
অবয়বের কদর্য প্রতিযোগিতা, সেই যে
কবে পড়া সেই অমোঘ বাণী—
‘বড় যদি হতে চাও, ছোট হও তবে’।
কী অর্থে সেটা ছিল আর কী অর্থে
সেটা পরিণত। মানুষের এই পরিণতি
দেখে মানবতাই হীনমন্যতায় ভোগে।
কবে যে প্রকৃত বড় হব! অতিমানবীয়
প্রকৃতিকে আর ভয় পাব না,
মননে ঋদ্ধ হব, শুদ্ধ হব,
অকারণ অসূয়ায় আর ভুগব না,
আমার গর্ব পড়শির ঈর্ষা বা
পড়শির গর্ব আমার ঈর্ষা হবে না,
আমার গর্ব পড়শির ঈর্ষা হলেও
পড়শির গর্ব আমারও গর্ব হবে,
পড়শির সুখ আমার সুখ, পড়শির দুঃখ
আমার দুঃখ হবে। অসহায় হাতে
হাত রাখতে শরীর ও মন কোনটাই
ঘিনঘিন করবে না, অসহায় ক্ষতে
সমব্যথার প্রলেপ দিতে এতটুকু
কার্পণ্য বোধ হবে না।
প্রকৃতিকে আত্মপ্রকৃতি বলে ভাবতে
গর্ব হবে, নিজেকে সব কিছু নীচতা হীনতার
ঊর্ধ্বে মানুষ বলে মনে করতে আত্মতৃপ্তি
হবে, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’কে চিরসত্য
আর নিজেকে ও সবাকে অমৃতের অংশভাক্ বলে
ভাবতে আনন্দে বুকটা টনটন করে উঠবে,
তবেই না প্রকৃত বড় হয়ে উঠব,
গাছ পাথরকে ছাড়িয়ে, তুচ্ছতা হীনতাকে ছাপিয়ে
আমার তথা সবার মাথা অভ্রংলিহ হয়ে উঠবে মহিমায়--
সে দিনের অপেক্ষাতে আছি
বামন উঞ্ছবৃত্তির প্রেক্ষাপটে।