সৃষ্টির চেয়ে মহান যেখানে স্রষ্টা, সেখানে
ভয় থেকে যায় মনের সংগোপনে-- সৃষ্টির
মূল্যায়নে হবে না তো দ্বিচারিতা দৃষ্টির,
ভ্রুকুটিবৃষ্টির অকাল বর্ষণে সব আলো
আর সৃষ্টির যত কিছু ভালো আলগোছে
মুছে নেবে না তো কালের হাওয়া এলোমেলো,
আবার সৃষ্টির মধ্যেই তারতম্যের তারের খেলা,
সমতা থাকবে তো সৃষ্ট সব অপরূপ সৃষ্টির!
না আঁচালে বিশ্বাস ছিল না, আজও নেই,
কারণ বাস্তব শুধুই চোখেতে ছিটোয় ধূলো।
বিশ্বাসেরা আজ ভ্রুকুটির পদানত, তাই
বিশ্বাসে কিছুই মেলে না, কারণ বিশ্বাস
আজ হয়ে গেছে অন্ধকারের কাছে জবাই,
সৃষ্টিরা আজ হয়ে গেছে ভাগাভাগি, তাই
গঙ্গা পায় না কেউ কেউ ভাগের মায়ের মত,
কেউ বড় সুখে আছে, কেউ বা নিঃশ্বাস
নিতেও ভয় পায়, আড়ালেই সারে জীবনের
যত কাজ, নিঃসাড়ে থাকে পাছে ধরা পড়ে যায়
আহ্লাদ যত জীবনের সব চেটে পুটে নিতে চায়
যারা তাদের কাছে, আধুলি বাজিয়ে কাউকে
কিনে নেওয়া, কাউকে বা ঘুম পাড়ানিয়া গানে
গোধূলি বেলায় ধূলোপায়ে বিদায় দেওয়া
কাজ যাদের।
আসলে বড় বাছাবাছি হে জীবনে, স্রষ্টা যা দিয়েছে,
নির্বিচারে নাও, কিন্তু না, ওই যে স্রষ্টার চেয়ে সৃষ্টি
নিকৃষ্ট তর, তাই বেছেবুছে নেওয়া, তাই তারও
তর ও তম করা, তাই যত বিভেদের আড়াল,
গোধূলিকে আধুলি দেয় হারিয়ে, লক্ষ্মীর ঝাঁপির
ঝাঁপাঝাপি ফুল্ল জ্যোৎস্নাকে করে বিজিত,
আরও কত মাপ কাঠি, যে যার মাপে।
বানভাসি মানুষের হাতগুলি চায় শুধু
আপন জনের উত্তাপ, মানবিকতার আশ্বাস।
বড় বন্যা এসেছে হে, সব ডুবে যায়, চরাচর যায়,
স্রষ্টাও যায়, সৃষ্টিও যায়, এ বন্যা কাউকে ছাড়ে না।