কার যে কত বসন্ত নিরুদ্দেশ হল,
তার নেই ইয়ত্তা। উলটো পালটা হাওয়া
এসে আলগোছে তুলে নিয়ে গেল সেই সব
বসন্তের অনাঘ্রাত চুম্বনগুলি, মায় আদর,
সোহাগ, শৃঙ্গার, অসংবৃত বসন, আগোছাল টিপ
ও বাসকসজ্জা। এবং অবশ্যই কিছু কিছু
গোপন দীর্ঘশ্বাস, দেওয়ালে কাটা দিনের পর
দিন যাওয়ার অশিক্ষিত দাগ, চেরা চেরা বুক চেরা
হাহাকারের মত। ‘কেউ’ কথা দিয়ে ‘কথা রাখেনি’।
ম্লান কদমের ফুল দিন যাপনের গ্লানি
অস্ফুটে গেয়ে যায় বেহাগে বুকের নিরালায়,
আগমনীতেও তাই লাগে বিষণ্ণ সুর,
আশাগুলি মরুটে গাছের মত কেবলই
লুটায়, ক্ষয়াটে জোছনায় আকুলি বিকুলি করে
অশরীরী ছায়া ছায়া ব্যর্থ কামনার দল।
‘কেউ’ কথা দিয়ে ‘কথা রাখেনি’।
কখনও বা মনে হয় প্রতীক্ষার দিন বুঝি শেষ,
আবার নতুন করে জীবনকে যাবে বুঝি পাওয়া,
যত কিছু হারানো উৎসব চেটেপুটে নেবে
যত অপূর্ণ আহ্লাদ, শেওলাগুলি অলংকার হয়ে
শুভদৃষ্টির শুষে নেবে ওম, প্রকট বলি রেখাগুলি
ছেড়ে দেবে নিজেদের দাবি, নবরাগের আড়ালে
স্বেচ্ছায় পথ হারাবে তারা। কিন্তু যা হবার নয়,
তা হয় না কখনও, যা হবার, তাই হয় অবশেষে।
কারণ ‘কেউ’ কথা দিয়ে ‘কথা রাখেনি’।