অনাক্রমণ ও সহাবস্থানের নীতি থাকলেও
প্রতিনিয়তই ব্যত্যয় ঘটে, এখন যেন
ব্যত্যয়ই হয়ে গেছে স্বাভাবিক, আর এর
ব্যত্যয় ঘটে কদাচিৎ। তাই সম্মানজনক
দূরত্ব বজায় রেখে বাঁচা—দুরূহ হয়ে উঠছে
ক্রমশ। আমার কিছু রোদ হঠাৎ দেখি হাওয়া,
আমার কিছু হাওয়া দেখি নিজেই হাওয়া,
স্যাঁতসেঁতে হাড়ে তাই সহজেই ধরে
শ্যাওলা, অস্তিত্বেও লাগে নোনা,
অচিরেই ঝুরঝুরে হয়ে খসে খসে পড়ে
জরদ্গব খড়, দড়ি, মাটি, রঙ ও
পোশাক-আশাক মায় জীবনের গরিমাটুকুও।
পারিপার্শ্বিক তো বটেই পারিবারিক সম্পর্কগুলোও
ক্রমশ হয়ে যাচ্ছে কেমন যেন ছাতাধরা, মলিন ও
কুটিল। ভালবাসা মলিন, মৈত্রী মলিন এমন কি
স্নেহও ভুগছে অদ্ভুত এক মালিন্যে,
আসলে রোদ-জল-হাওয়া না থাকলে
হৃদয়ে রোদ-জল-হাওয়া থাকে কী করে?
আর তা না থাকলে ভালবাসা, মৈত্রী ও
স্নেহগুলিও তরতাজা থাকে কী করে?
এই মানসাঙ্ক মানুষই বুঝল না তো
তথাকথিত মানুষরা বুঝবে কী করে?
তাই হৃদয়ে জমে ওঠে ইট-কাঠ-পাথর আর
অনুভূতিগুলিতেও তাই।
একদিন বহির্বিশ্বের কেউ এসে দেখবে---
পৃথিবীতে কেবল ছাতাপড়া শেওলাধরা কিছু
ইট-কাঠ-বালি-পাথরই ঘোরা ফেরা
করছে মানুষের বদলে, কোথাও এতটুকু
ফাঁক-ফোকর নেই, কবিতাগুলিও কেমন যেন
বিষণ্ণ জমাট বাঁধা, চারিদিকে শুধুই পূর্ণতা,
আর দুঃখের বিষয়—এ পূর্ণতা সে পূর্ণতা নয়
সত্যদ্রষ্টা ঋষিরা যার কথা বলেছিলেন—
“ওঁ পূর্ণমদঃ, পূর্ণমিদং, পূর্ণাৎ পূর্ণমুদচ্যতে,
পূর্ণস্য পূর্ণমাদায় পূর্ণমেবাবশিষ্যতে”।