সিনেমাকে আমরা বলতেম “বই দেখা”
-চল বই দেখে আসি;
সেকালের পর্দা টানানো ঘরেই উত্তম সুচিত্রা আসতো
সাদাকালোয় গভীর আবেশের পানসি ভাসতো মনকণিকায়

ইশকুল ছাড়বার বয়সে বই দেখা রুপ নিলো “ছবি দেখা”য়
মোড়ের চায়ের দোকানে সবে আড্ডার ঝাঁপি খুলেছি আমরা
পথ চলতি আধপোড়া সিগারেট তখন বিস্ময়!
পকেটের ঘরে দশটি টাকা হলেই বলতেম-
চল ছবি দেখে আসি...
রঙ্গীন ফিতেয় ভাসতো অদ্ভুতুড়ে ভালোবাসা,
দেহটাকে মেলে দিয়ে অদ্ভুত কিছু কিংবা ঝাঁপতাল পুরো পর্দাময়।

এরপর কলোনীর বাইসাইকেল বয়সে-
রাস্তার ধারে চলতো টিপ্পনী, বৈদিক উৎসবে চোখাচোখি
সবেকার মিছিমিছি অভিমান খেলা।
হাত-খরচার টাকা জমলেই বলতেম চল সিনেমা দেখে আসি
অন্ধকারে সিনেমায় পর্দা কাঁপিয়ে সকল আবেগ নিয়ে-
ডুবে যেত আমাদের নায়ক-নায়িকারা,
মাঝে-সাঝে আমরাও...

এখন পাশ-পকেটে সেলফোনে সিনেমা ঘুমিয়ে থাকে
ঘুমিয়ে থাকে কথাকল্পগল্পসল্প
সিনেমাকে সিনেমা আর বলি না, বলি মুভি!
বেহুলা সুরের বাঁশিতে স্বামী উদ্ভটানন্দ এখন সানাই বাজায়
হলে শিটি বাজার আগেই সেন্সর বোর্ড বলে.
..দাদা আরেকটা “আইটম সঙ” দেন না...
সিনেমা হলের হাতল চেয়ারে ম্রিয়মাণ দর্শক এখন ঘুমায়
ঘুম পোকায় ছেয়ে যাচ্ছে পর্দার চারপাশ
মৃণাল-সত্যজিৎ-হৃত্বিক-ঋতুপর্ণ উঠে দাঁড়াবে না আর হয়তো।
হারিয়ে যাচ্ছে সিনেমা দেখার দিন।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
রচনাকাল : পয়লা জানুয়ারী দুইহাজার ষোল খ্রিষ্টাব্দ
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦