অনিলা,
তোমাকে দেখে মনে হলো আসলে মুখে তোমার হাসির ছটার আড়ালে একটা দুখী বন আছে যেখানে তুমি নিত্য উত্তাপ ছড়াও, যেখানে তুমি নিত্য অশ্র“ লেপন কর। তোমার যে অকাল বৈধব্য হয়েছে সেটা কিন্তু কোনদিন চিঠিতে জানাওনি। হয়তো তুমি কখনই আমার কাছে হারতে চাওনি তাই।
এই সেদিন পর্যন্তও আমি তোমাকে দুর থেকে একটা সুখী রমনী ভাবতাম হয়তো সে জন্যই তোমাকে নিয়ে কিছু লেখা হয়ে উঠেনি। সুখি সুখি মুডে গল্প শেষ করি আমি। তারপরও আমার গল্পের নায়িকারা দুঃখী হয় কিন্তু আজ দেখলাম তোমার দুঃখের কাছে তারা কিছুই না।
অনি আজ একটা প্রশ্ন করবো তোমায়? বলতে পারো আমাদের সেই লালরঙা ট্রেনটা কেন জং ধরে ষ্টেশানে শুয়ে আছে? বলতে পারো কেন আমাদের হাত ধরে ট্রেনলাইনের শেষ আর দেখা হলোনা?
জানি তোমার মুখে উত্তর নেই। তুমি বলবে সে-ছোটবেলাকার কথা। তখন কম বয়সে কতো কিছু ভাবা হতো! আর আমাদের ইচ্ছে গুলো তখন ছিল মুক্ত তাই ভাবনাটাও ছিল সরল।
এরপর তোমার আমার কিংবা আমাদের সবার জীবনেই হাজার হাজার ইচ্ছেরা বাসা বেধেছে। কোন কোন ইচ্ছেরা সফল হয়েছে আবার কিছু কিছু ইচ্ছেরা ব্যর্থ।
নিজের জীবনের গল্প দিয়ে এবার নিশ্চই তুমি বিশ্বাস করবে ইচ্ছে শক্তিরা কখনো কখনো উপায়ের হাত ধরেও দুর্বল হয়ে পড়ে।
অনিলা, জীবনকে কাগজের নৌকা করে ভাসানো ঠিক নয়;
সে নৌকা ডুবে গেলে আশাগুলো ভাসে নদীর জলে সেখানে শুধু কষ্টরা ভেংচি কাটে রোজ দিনরাত্রি। জীবনে ঘাত-প্রতিঘাত থাকবেই তাতে বিষন্নতার ঢেউ উঠবে তার জন্য আয়ু খাতায় লেখা দিনগুলোকে শুধু শুধু মন খারাপের কালি দিয়ে ভরিয়ে কি লাভ? যতদিন নাকের সামনে আয়ুবাতাস আছে ততদিন না হয় কষ্টের জলে আনন্দ মিশিয়ে বাচোঁ।
জানি তুমি ঘুমের মাঝেও নিজেকে মেলে দাও শূণ্যতার মরুদ্যানে কিন্তু আর কতদিন এভাবে চলবে। আজকাল তুমি কষ্ট লুকিয়েও হাসো।
চোখে তোমার সবুজ দ্বীপ জ্বলে তবুও আমি সব কিছুর মাঝেও তোমার চোখ দেখেই বলে দিতে পারি আসলে তুমি ভালো নেই।