*
০১/
'মা'
গ্রীষ্মবলয় থেকে
দূরে ফেরী'তে করে বাজার আসে
আগুনের জানালায়।
চুলোতে দেওয়া মাংস সিদ্ধ হতে ঠিক ত্রিশ
মিনিট লাগে ;
আপনাকে চুলার সাথে
ঠিক ত্রিশ মিনিট জ্বলতে হবে !
চিবুকে না সইলে পেঁপে কিংবা
চিনি দিন উনুনে ;
এবার বসে পড়ুন,
অপেক্ষা করুন আগুনে ;
দ্বিগুণ যন্ত্রনায় টগবগিয়ে সিদ্ধ হতে থাকুন !
দুপুরেরর খাবার দেওয়া হবে
বসে পড়ুন হে সন্তানেরা ;
আজ আপনাদের
চিতায় পোড়ানো নারীর
মাংস খাওয়ানো হবে !
০২/
যেহেতু মা একজন ব্যাঙ সদৃশ প্রাণী-
'ছ'মাস জলে এবং 'ছ'মাস কুয়োতে বাস করেন ;
ঘর ও বাহির সম্পর্কে তার ধারণা জায়নামাজ থেকে কামাক্ষা
বস্ত্রবিতান পর্যন্ত ।
মা বুঝতে পারেননা -
উনি আসলে সবুজ মারমেইড,
মা'য়ের জন্মস্থান নদীর দেশে, বীক্রমপুর !
অষ্টাশির বন্যায় 'নানা'ভাই' তিনটি কালো
পাথর নিয়ে শেরপুর চলে আসেন ;
পাথর তিনটি যথাক্রমে
একটি ধর্ম রক্ষার,
একটি পুত্র রক্ষার,
একটি সততা রক্ষার।
বিক্রমপুরে মায়ের জন্ম যেদিন হলো--
সেদিন খুব করে বৃষ্টি হয়েছিলো বিক্রমপুর জুড়ে ;
ফলশ্রুতিতে বন্যায় ভেসে যায় পূর্বপুরুষের
ভিটেমাটি ; নানা'ভাই --যেহেতু গ্রাম্য
মোড়ল গড়নদার একজন মানুষ
স্বভাবতই কন্যা সন্তান আশা করেন' না ;
বন্যার অভিশাপে দায়ী হলেন দানপ্রিয় (আমার) 'মা' ।
০৩/
বিশ সেপ্টেম্বর নানাভাই মারা যান ;
উনার জানাজার দিনে উঠোনে গড়িয়ে
গড়িয়ে কেঁদেছিলেন আমার ' মা ' ;
আমি অষ্টাশির বন্যা দেখেনি
তবুও দেখেছি মায়ের দু'চোখে ভেসে যাওয়া
"পিতা হারানো বিক্রমপুর "।
০৪/
ষাটোর্ধ নারীকে
বৃদ্বাশ্রমে রাখতে যাচ্ছেন !
কাকে রাখছেন?
যার বুকের দুধ কেড়ে খেতেন !
আজকে যাকে আয়নাতে দেখলেন
সে আবার আপনি ননতো !
কাল দুপুরে আপনার সন্তানেরা
বৃদ্বাশ্রমের পথ নিশ্চয়ই চিনবেনা !