১.
চল সখী চল চলি মেরুর দেশে
তপ্ততাকে ব্যাকপ্যাকে ভাঁজ করে
বৃষ্টিটাকে ওয়াটার পটে পুরে
সাইবেরিয়ার আলাস্কার বার্জ তলে।
বদলে গেছে এই দুনিয়ার হাওয়া
বর্ষা এখন হঠাৎই যায় পাওয়া
শীতের পাখি পথ ভুলে দূরদেশে
আর আসেনা আমার ঘরের পাশে।
মাঠ ফাটা, নেই সবুজ সে গ্রাম আজ
কৃষক পিঠে করছে লবণ চাষ
যদিও আমি শীতের হাওয়ায় বসে
তৃষ্ণা মেটাই শস্যের প্রাণ রসে।
গাভীর দুধে আমার ছেলের প্রাণ
বাঁচিয়ে, মারি গরুর বাছার জান
বৈপরীত্য আমার স্বভাব জুড়ে
মানুষ আমি শোষণ রক্ত ভরে।
লক্ষ কোটি সৃষ্ট জগত ফেলে
আমায় নিয়েই আল্লাহ্র জেরবার
আমিই নাকি সৃষ্টি-সেরা জীব
আমায় দেবেন বিশ্ব শাসন ভার।
তাপ বাড়ছে গলছে বরফচাঁই
দাবানলে পুড়েছে বন-বনানী
বরফ ঝড়ে ডুবছে শহর-নগর
হারিয়ে যাচ্ছে নদীর মিঠে পানি।
জলবায়ুর এই অস্থিরতা রেখে
আমরা আছি শাসনতন্ত্রে মেতে
কোন তন্ত্রে চলবে মানব জাতি
হিসেব কষছি মারণাস্ত্র হাতে।
মাটির তলে উথাল পাথাল রেখে
মাটির উপর করছি আনার চাষ
পায়ের নিচে বদলে যাচ্ছে রেখা
দেশ মহাদেশ অতল সাগর পাশ।
এসব আমার বিবেচনায় নাই
আমরা আছি খোদার বিধান নিয়ে
কার খোদা যে আসল খোদা-তালা
স্বর্গে যাবে মানুষ কোনটা বেয়ে!
যাক মরে যাক সবুজ এ পৃথিবী
আমার আছে বেহশ্তী গুলবাগ
পায়ের তলায় মদের নহর বেয়ে
হুর-পরীতে মাতার স্বপ্ন-সাধ।
২.
চল সখি চল পালাই এসব ছেড়ে
মঙ্গল গ্রহে সবজী করি চাষ
আলু লেটুস না হয় ক্যাপসিকাম
খেয়েই করি লক্ষ বছর বাস।
পৃথিবীটা আল্লাহ্-খোদা-তা-লার
পড়ে গেছে চলার পথের পাশে
একটু কিছু হিসেব ছাড়া হলে
জীবরাইলে কিতাব নিয়ে আসে।
তারচে’ ভালো দূর অচেনায় যাই
যেখানটাতে স্রষ্টা-খোদা নাই
নাই কোন এক পরকালের নেশা
পাপ-পূণ্যের জটিল হিসেব কষা।
আছে শুধু মহাকালের জীবন
একটি জন্ম একটি বারই মরণ
রোজ হাশর বা পুনর্জন্ম নাই
সেটাই হোক না তোর আর আমার ঠাঁই।।
বট ও পাকুড় (অনুসন্ধান)/ঢাকা
১৬ বৈশাখ ১৪২৩/শুক্রবার/২৯ এপ্রিল ২০১৬।