লাইভ
এখন অাযান হচ্ছে, মাইকে-মসজিদে,
চারপাশ ধ্বনিময়, উত্তেজনাহীন,
কিন্তু বিয়াল্লিশ বা তারও বেশি অাগে
এমনি এক অাগস্টের মধ্যরাতের পরে
অাযানের পাঁজর গলে ছুটেছিল
গুলি, গোলা, রকেট লাঞ্চার....
বিদীর্ণ বাংলার বুক, বাংলার হৃদয়
বিদ্ধ হয়েছিল মুজিবের বুকে, পিতা মুজিব।
ঘাতক ছাড়া অার কেউ কি জেগেছিল সে রাতে? নির্ঘুম?
অনেকেই তো তার বুকের ছায়ায় স্থান নিয়েছিল....
তোফাল-বামাল-অামির-ফকির-মৌদুদু--অাহা যাদু...
না কেউ ছিল না পাশে......কেবল এক জামিল
একালের সিনফ্রে। অার সবাই চোখ খোলা অন্ধ
অার সবাই ভীত ইঁদুরের দল, পা-চাটা কুকুরের দল
সেই নোংরা থিকথিকে ভোরে, ঢাকার গলিতে।
মুজিবের বুকের ঠিক সেইখানটাকে বিদ্ধ করেছিল
ঘাতক বুলেট, যেখানে সবুজ দুর্বার বুকে
জমাট বেঁধে ছিল লক্ষ বছরের ভালবাসার হিমবাহ
যত তাপ দাও, পোড়াও, শুধু ভালোবাসাই ছড়াবে।
তারপর রক্তে ভিজে উঠেছিল সফেদ পানজাবি
বত্রিশ নম্বরের সিঁড়ি, সবুজ ঘাস এবং রক্ত ক্রমশঃ
যেন লাল গোলাপ ও গোলাপ পাপড়ি,
সারা বাংলাদেশময় ছড়ানো গোলাপ বাগান
এবং এক সময় পলকের মাঝে কোটি কোটি গোলাপ
ঘাতকের বিপরীতে রক্তচক্ষু হয়ে ওঠে।
সে রাতেও কি ঘাতকের গুলির শব্দের পরও
মুসল্লীরা গিয়ে নামাজ পড়েছিল সোবহানবাগ মসজিদে!
যার কিছু ব্যবধানেই রাজপথে পড়েছিলেন
কর্ণেল শাফায়াত জামিল, লাশ হয়ে!
মসজিদে নামাজীরা তখন কি প্রার্থনা করছিলেন
ঘুম পাগল, অলস বাঙালি জানতে পারেনি সেসব।
কিন্তু কামাল-বামাল-মোস্তাকিসিন্জিয়ার গং
ঠিক পেয়েছিল মানব রক্তের ঘ্রাণ, বুঝেছিল ...
এ রক্ত রক্তবীজ হয়ে গেছে মুহূর্তের ব্যবধানে
অদ্ভূত মিউটেশন--তাড়াতাড়ি ছুটে অাসে কপ্টার
প্রাণহীন মুজিব ঠিক ছুটে চলে হাওয়ায় ভর করে
প্রিয় মৃত্তিকার কোলে, ভীত ঘাতক, দাফন করেই
দ্রুত পলায়ন করে।
প্রতিটি পনেরই অাগস্টের ভোর ঘাতক ও তাদের
এক একটি সন্ত্রস্থতার কাল, ভীরুতার বর্ষপূর্তি
কাপুরুষতার নেড়ি কুত্তা অাখ্যান রচনার কাল।
অার প্রতিটি বাঙালির কাছে
অারো এক কোটি সাহসী বাঙালির
চেতনা বোনার কাল, মুজিবের রক্তবীজ থেকে।
অারশাদ ইমাম; রক্তবীজ; মঙ্গলবার
১৫ অাগষ্ট ২০১৭; ঢাকা।