তিনি আছেন, ছিলেন এবং পুনরায় আছেন
আরো দোর্দন্ড প্রতাপশালী, বলদর্পী, স্বপ্ন দ্রষ্টা, আদর্শ এবং
ভালোবাসার অক্ষয় অনুভূতি হয়ে
তিনি আগের চেয়েও দীপ্যমান হয়ে বেঁচে আছেন-মুজিব।
তাঁকে নিয়ে লেখার কিছু নেই, কারণ তিনি অক্ষরমালার উর্ধ্বে
তাঁকে নিয়ে আঁকার কিছু নেই, কারণ তিনি কল্পনারও উপরে
তাঁকে নিয়ে বলার কিছু নেই, কারণ আমার ভাষা তার ভাষার চেয়ে
শব্দ চয়নে শ্রেষ্ঠ নয়, উচ্চারণে অধিক মনোমুগ্ধকর নয়,
ভাবনায় অধিক কালদর্শী নয়, এমনকি প্রক্ষেপনেরও শ্রেয় নয়
তাঁকে নিয়ে আছে শোনার, দেখার, বুঝার, ভাবার, অনুভব করার
তাঁকে নিয়ে আছে সাত সমুদ্দুর তের নদী ভালবাসবার অনেক সুযোগ।
তাঁকে মানুষ ভেবো, মহামানব, কিন্তু মানবোত্তর নয়, দেবতুল্য নয়
কারণ দেবতা বলে কিছু নেই, দেবতারা কেবলই সবল মানুষ
মুর্খের কাছে অজ্ঞেয়, দুর্জনের কাছে সর্বজ্ঞেয়
মিথ্যার কাছে আদরনীয় সত্য
সত্যের কাছে কেবলই অপারেটর, অতি নগন্য;
তাঁকে কেবলই মাটির মানুষ ভেবো, তিনি মরণশীল মরণোত্তর।
তাঁকে নিয়ে যা কিছু করি না কেন, তার চেয়ে উপরে যেতে পারব না
তার মত সঠান, তার মতো বুক চিতিয়ে দৃপ্ত পায়ে, মাথা তুলে
কখনোই সামনে এসে দাঁড়াবার যোগ্য হয়ে উঠব না
কারণ আমি জানি, তার মত বুক নিয়ে কেউ এসে সামনে দাঁড়িয়ে
বলার সাহস রাখে না, ‘কে তোরা? কি চাস আমার কাছে?’-বলার।
তিনি বুকের ভিতরে রেখেছিলেন এক বিশ্ব মানবতা
বুকের ভিতরে বুনেছিলেন এক ভালবাসার মহীরূহ
বুকের ভিতরে বেঁধেছিলেন বোধিবৃক্ষের ডেরা
বুকের ভিতরে ধারণ করেছিলেন সারল্যের সরোবর।
আমাদের যোগ্যতা নেই সেই মানবতা বোধকে ধারণ করার,
মহীরূহের সুবাতাস আস্বাদনের, বোধীজ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হবার,
সরলতায় শুদ্ধস্নানের।
আমাদের কর্দমাক্ত চিন্তা, কুটিল ভাবনা, বিদ্বেষদুষ্ট মন
আমাদেরকেই জারিত করে সারাক্ষণ, বিষিয়ে তোলে জীবন
আমরা বুঝি না সেটা, এটাই আমাদের ক্ষুদ্রতা।
আজ শতবর্ষ পেরিয়ে আমাদের ক্ষুদ্রতা অতিক্রমের প্রত্যাশা ছাড়া
আর কোন প্রত্যাশা নেই।
যদি পারি, সেটাই হবে আমাদের নিজেদের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি, সেটাই হবে
মুজিবের জন্য আমাদের আগামী একশ বছরের শ্রেষ্ঠ সম্মান প্রদর্শন।
আরশাদ ইমাম।।পরিকল্পনা কমিশন।।ঢাকা
১৮ মার্চ ২০২০।।বুধবার