শীতের সন্ধ্যাবেলা,
চারিদিকে ঘন কুয়াশার চাদর!
রাস্তার মোড়ে উনুন জ্বলছে,
বিক্রি হচ্ছে রুটি আর সবজী।
সাথে বুটের ডাল আছে,
আর আছে ডিম ভাজা,
মামলেট অথবা পোঁচ,
যার যেটা পছন্দ নিচ্ছে কিনে,
এ নিয়ে মহা আয়োজনে-
তিন বেলার ভোজ।
উনুন জ্বলছে একটি কার্টে!
বিক্রেতা মধ্যবয়সী এক সুঠামদেহী।
তার চোখে ভালো বিক্রির স্বপ্ন-
এতেই তার সীমাহীন আনন্দ।
সকালের নাস্তা কিনতে এসেছেন এক বৃদ্ধ!
হাতে লাঠি, পরণে সুসজ্জিত পোশাক।
সুযোগ্য ছেলে-মেয়েরা কেউ পাশে নেই,
বুড়া-বুড়ির দেখাশোনা চলে নিজেরা নিজেই!
পকেটে টাকা আছে, নিজের অথবা সন্তানের,
নেই শেষ বয়সে সঙ্গ দেবার কেউ,
ভাবনায় প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির সীমাহীন ঢেউ!
দুপুরের খাবার খেতে এসেছেন একজন অফিসার,
চাকুরীজীবী, মধ্যবিত্ত, স্বল্প আয়ের জীবিকা,
পরিবার থেকে দূরে একাকী বসবাস,
মাপা আয়ে চলে সংসার, মনে কষ্টের অজানা পাহাড়!
মাসের শুরু থেকে শেষে, জীবন চলে হিসাব কষে,
একবেলা ভালো খেলে, ওবেলা খেতে হয় হালকা,
এভাবেই জীবন চলছে, সুন্দর ভবিষ্যতের পথ বাঁকা।
সন্ধ্যায় নাস্তা করতে এসেছেন একজন ছাত্র,
টিউশনি শেষে হলে ফিরছে, পকেটে বেতনের টাকা।
অনেক দিন বাইরে খায়নি সে, হিসেবের পয়সা,
টিউশনি করে চলতে হয়, চালাতে হয় পরিবারও,
খেতে খেতে স্বপ্ন দেখছে ভালো একটি চাকরি পাবার,
এ স্বপ্নের চেতনায় বিভোর হয়ে তার বর্তমান পথ চলা।
রাতের খাবার খেতে এসেছেন একজন রিকশাওয়ালা,
বড় ক্ষুধার্ত, তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে রিজিকে যা জুটেছে,
আজকে হয়তো ভালো আয় হয়েছে, ভালো চলছে,
আগামীকাল কি হবে তার ভাবনাতে নেই তেমন,
কর্মঠ এ শ্রমজীবীর মননে জীবন যেখানে যেমন!
প্রতিদিন উনুন জ্বলে, রুটি বানানো হয়,
রুটি খেতে আসে কত রকমের কত মানুষ,
জীবনের যুদ্ধে সকলেই সংগ্রাম করে চলেছে,
কেউ হাসছে, কেউ দুঃখে মুহ্যমান রয়েছে,
উনুনের আগুনের আঁচ নয় অল্প,
এভাবেই চলছে আটপৌরে জীবনের গল্প।
২১ ডিসেম্বর, রাত ৯:৩০।