চাকা জোড়ে জোড়ে ঘুরিয়ে
ঘাম ধীরে ধীরে গড়িয়ে
দ্রুত বেগে বেগে চলছে;
যাত্রীকে পৌঁছাবেই ঠিক সময়ে।
বুক ধুক ধুক কাঁপছে
যাত্রী রেগে রেগে বকছে
রিক্সা দ্রুত দ্রুত চলছে;
যাত্রীকে পৌঁছাবেই ঠিক সময়ে।
রিক্সামামার পথে পথে চলা
সাথে রিক্সার টুং টুং খেলা
খড় খড় রোদে জ্বর জ্বর জ্বালা ;
সে যে থামবার পাত্র না।
কনকন শীতে মামার খকখক কাশি
তবুও ঠোটে চেপে তার চুপচাপ হাসি;
অভাবে - স্বভাবে এগিয়ে চলা
সে যে থামবার পাত্র না।
কথায় কথায় ফুটে হতাশা
জ্বলজ্বল চোখে দেখে আশা
ঘুচবে কি কালে কালে দুরাশা?
সে যে থামবার পাত্র না।
আজ বাড়িওয়ালা দৌড়ে দৌড়ে চড়ল
রিক্সামামা মুচকি মুচকি হাসল
বেগে ধেয়ে তার রিক্সা উড়ে চলল
ভাবল,বড়সাব কি আর পঞ্চাশের নিচে দিবে!
রিক্সা জোড়ে সোড়ে চালিয়ে
সা'ব কে দিল ঠিকঠাক পৌঁছে
সা'ব নামে মামা সুরে সুরে নাচে
ভাবল,বড়সাব কি আর পঞ্চাশের নিচে দিবে!
বাড়িওয়ালা গরম গরম পকেটে
ডানহাত ধীরে ধীরে ঢুকিয়ে
বের করে ছেঁড়া-ফাড়া পাঁচ টাকা
বলে,মাসতো শেষ;ঘরভাড়া কবে দিবে?
তার নির্মল ছলছল চোখে ভাসে
করুণার ঝলমল ছায়া আর বাতাসে
উড়ে রুক্ষ চুল;সে মৃদু মৃদু হাসে;
জানে কোনো একদিন লালসূর্য দেখবে।
রিক্সামামা পুনরায় ধীরে ধীরে ধায়
দেখে কিছু যুবক মেতে আড্ডায়-ওড্ডায়
সে নিবু নিবু চোখে তাকায় হতাশায়;
হয়ত এখনই ধোঁয়ার আসর বসবে।
তাদের দেখে মনে মনে ভাবল সে,
করেছিলাম যুদ্ধ তোদের বয়সে
আর তোরা ভেসে অপরাধের বাতাসে
লালসূর্য আর এ জীবনে না উঠবে