নির্বাক চোখে আমি দেখি শহর
প্রাণহীন এই নির্বাক শহর,
উদ্দেশ্যহীন শহরের মোটর
অবিরাম সামনে ধায়;
জ্বালানিতে শুধু চায়-
মানুষের সুখ আর
সুখী মন কাঠ হয়ে যায়।
কাঠ হওয়া মন আজ
দেখে না স্বপন,
নিত্য একই রুটিনে কাজ
এইতো শহুরে জীবন।
তাইতো গেলাম ফিরে,
হাজারো পানকৌড়ির ভীরে,
হারিয়ে যাওয়া গ্রামে
সেই বহু পথ দূরে
যেথায় দেখেছি আশা-আলো
চোখের দৃষ্টি পেলাম ফিরে।
ভোরবেলা মোর ভাঙল ঘুম
কানে এসে জোরে মোরগের ডাক কুক্কুরুক্কুক
উঠোনে বেরোলে ভরল বুক-
মিষ্টি বাতাসে,মন পাখির গানে।
বহুদিন পর চোখ মেলে
লাল সূর্য দেখি,
কিছুক্ষণ পর হলুদ সূর্য এলে
সোনালি আলোর ঝিলিমিলি।
সোনালি আলোর ঝিল-ঝলকে
পাতার কিনারা উঠে চমকে,
রোদ্রের খেলা দেখিনু আমি
পাতার ফাঁকে ফাঁকে।
সকাল কেটে দুপুর ধায়
ঘাটের জলে গা ভাসায়
পুকুরে মাছ ধরল জালে
তা-ই ভেজে খেয়ে দেয়ে সকলে
গভীর ঘুমে ডুবলে।
এক ঘুমে উঠি বিকেলে
ঘুমু ঘুমু চোখে গেলাম উঠোনে
দখিনা হাওয়া লাগল হৃদয়ে
নিখিলের টান অনুভূত মনে।
আলপথ দিয়ে চলি হেঁটে হেঁটে
ধানক্ষেত জুড়ে পথের দুধারে
কিছুদূর পর এক মাঠে দেখি
ফুটবল খেলা
আনন্দ-মেলা সকলে
গ্রাম্যমেলার হয় না তুলনা।
সন্ধ্যায় এলাম ফিরে
অগণিত জোনাকির ভীরে
সবে মিলে কতনা গল্প কাহিনী
তাই শুনে নিরালা পার রজ্জনী।
রাতে জানালার; ধারে মন ভাসে
উপভাগ করি জ্যোৎস্নার আভাস,
মিষ্টি বাতাস সাথে নিয়ে আসে
সঙ্গে করে কত ফুলের সুবাস।
মাঝরাতে আসে শিয়ালের ডাক আর
ঘুম থেকে উঠে আমি হতবাক
এতো সেই ঢাকা
যার পিষ্টনে থামিল সবার
জীবনের চাকা।
চাই না এ শহর যা বিভীষিকাময়
যার পরিণতি বেদনাময়, মরণ;
যাতে মিশে গেছে দূষিত বায়ু
কমিয়ে দিল যা
শত মানুষের আয়ু,
যাতে মিশে আছে কালোজল
হারিয়ে গেল কত সবল!
কোথায় সে কোকিল, শালিক, কাক
বাংলার প্রকৃতিতে মুখর যাদের ডাক
লোভে পড়ে সবে তোমরা,
হারালে প্রকৃতি
পেলে শুধু টাকা আর টাকা
কী পেলাম আমরা?
যেন মানুষরূপী মূর্তি
কাপুরুষেরা দিল গা ঢাকা।
চোখে ঘুম হায়, বারেবার দেখতে চাই
সেই একই স্বপ্ন, রজনী-তিথি
শুধু স্বপ্নেতেই দেখতে পাই
হারিয়ে যাওয়া নির্মল প্রকৃতি।