জানালা হইতে আবছা কিরণ ছড়িয়া
পড়িতেছে দুই নয়ন ভরিয়া,
যেন চাঁদনী পসর যামিনী
ওহে পরী! লাল শাড়ি পড়িয়া
একলা দাঁড়াইয়া সেই রমনী;
ক্ষীণ আলোয় হেরিলাম তাহার
লাবণ্যময়ী বদনখানি।
আঁখি জুড়িয়া জ্যোৎস্নারমায়া
মুখমণ্ডল যেন ধরণী মায়ের মায়া
নারীর রূপে পুরুষ কেন মুগ্ধ!
বুঝিলাম তাহার দর্শন পাইয়া।
তাহার কৃষ্ণকেশ যথা বৃষ্টিভেজা লতা
হাসনাহেনার সুবাসে
আমি বেহুশ হেথা নেই কথা
মায়াবিনী নৃত্যে ভাসে
আর মম হৃদয়ে বাজিয়া গান তথা
সেই নৃত্যের ভঙ্গিতে
খুশির কম্পন
মম অঙ্গেতে
সঙ্গে বাজিয়া পায়ের নুপুর
ইচ্ছে করিছে-বাজাই শঙ্খসুর!
নাচিতেছে হায় মম মন চায়
আজীবন এই রূপসীকে হেরি
উঠিবার চাই বেহুশ হইয়া যাই
কে তুমি অচেনা পরী?
নাচিতেছে আর নুপুর বাজিতেছে
যেন শিউলিমালা দুলিতেছে, প্রতিক্ষণে
ফিরিয়া যেই সে খুলিল
তাহার চিকচিক ভেজা চুল
কয়েক ফোটা জল লাগিল
মম নয়নে;আর কম্পিত হইল
হৃদয় উপকূল।
কিয়ৎক্ষণে উঠিলাম বিছানা হইতে
বৃষ্টির জল আসিতেছে জানালা হইতে
কিন্তু কোথায় সে রমনী?
কোথায় হে মায়াবিনী?
একা ফেলিয়া আমায়
চলিয়া গেলে কোথায়?
সারাগৃহ ধাই, তাহার দর্শন না পাই।
একি স্বপ্ন নাকি মিছে সত্যি
বুঝিতে পারিলাম না হায়
হাসনাহেনার সুবাস দিব্যি
এখনও যে পাই
আবার আসিও নিরালায়
কেহ নাই মোর কেহ নাই।