তেরপলে ঢাকা এক টুকরো সংসার আমাদের
তুমি আমি পাশাপাশি , সুখে দুঃখে
আশা নিরাশায় , মান অভিমানে
আজও একসাথে...
আর কেটে যাচ্ছে আমাদের এইসব মেটে দিনগুলো ।
আমাদের অনেক স্বপ্ন আছে , আছে আকাঙ্খাও অগণ্য
যেমন থাকে মানুষের ।
সবটাই শেষ পর্যন্ত অর্থহীন হবে না হয়তো
হয়তো চলতে চলতে একদিন আমরা সহসা খুঁজে পাবো
সুউচ্চ মিনার সুপ্রাচীন কোনও উপাসনালয়ের ,
সেখানে নিরামিষাশী বিশ্বাসীদের প্রার্থনা কোরাসে
আমরাও কণ্ঠে কণ্ঠ মিলাবো ।
যাদের আন্তরিক ভালবাসায় ভরা উচ্চকিত প্রার্থনা
আদি , অকৃত্রিম ; শুরু ও শেষ যার সম্পূর্ণ বর্ণ রহিত ,
নিটোল সাদাকালো , আমাদের সবার থেকে আলাদা ।
আমরাও যুক্ত হবো সেদিন তাদের সেই প্রার্থনাসভায়
আর তাবৎ শাপ ও পাপ মুক্ত হবো ইত্যবসরের জীবনের ।
তবে আপাতত এই যে এই ফুলেল উদ্যানে দাঁড়িয়েছি আমরা
এই উজ্জ্বল রক্তিম অপরাহ্ণে প্রিয়তমা ,
এসো , আজ এখানে উড়িয়ে দেই আমাদের পোষা পাখিগুলো
যাক , ওরা উড়ে যাক আকাশে আবার
যেখানে যেমন খুশি উড়ে বেড়াক মনের সুখে ,
খুঁজে নিক ওদের গন্তব্য নিজেরা নিজের মতো ।
হাতে হাত রাখো প্রাণাধিক সঙ্গিনী আমার
হৃদয়ে হৃদয় রাখো , সূর্যাস্তের শেষ রোদ্দুর প্রাণ ভরে মাখো গা'য়ে ,
দেখো , কতো সুন্দর এই পৃথিবী আমাদের ,
ততোধিক সুন্দর এই জীবন , সুখে দুঃখে একসাথে বেঁচে থাকা !
এসো , দুজন এক্ষুণি উড়িয়ে দেই খাঁচায় বন্দি বিষণ্ণ পাখিগুলো
কিছুটা ঋণমুক্ত করি নিজেদের , ও পৃথিবীকেও ।
একটু পরেই সন্ধ্যা ঘনাবে , আর তারপর আবার দুজন লুকোবো
সেই তো তেরপলে ঢাকা আমাদের ছোট্ট এক রত্তি পৃথিবীতে !
শুধু মাঝখানে এই রৌদ্রময় প্রাণোচ্ছল উষ্ণ অপরাহ্ণটুকু ,
এসো প্রিয়তমা , আনন্দ হাসি গান উল্লাসে ভরে তুলি দুজন ।
কোনও খেদ রেখো না মনে , লুকিয়ে সঙ্গোপনে , অলক্ষ্যে আমার
যদি থাকে উড়িয়ে দাও আজ এই শেষ বিকেলের সান্দ্র বাতাসে ।
মনে কর , এখানেই পৃথিবীর এক টুকরা স্বর্গ আমাদের
এখানেই জীবনের অমূল্য কণ্ঠহার তোমার আমার ।
এসো সাথি , এক্ষুণি উড়িয়ে দেই খাঁচায় বন্দি ব্যথিত পাখিগুলো
তারপর দেখবে ফিরে যেয়ে , দুজনার তেরপলের সেই এক টুকরো
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সংসারই হবে পৃথিবীর সবচে' শুদ্ধতম উপাসনালয় ।