এই পিচ্চি! বলেন ভাই।
এইখানে কি? পয়সা চাই।
নাম কি তোর? ফুলওয়ালী কয়।
ফুল বেচিস কি? যদি কেউ লয়।
বাড়ি কই রে? বেশি দূরে না।
বাবা মা কই? আমি জানি না।
দেখছিস তাদের? মারে দেখছি।
আর বাবা কই? বহুত খুজছি।
মা কই তোর? মইরা গেছে।
আর কেউ নাই? ছোট ভাই আছে।
কই আছে সে? রাখছি বাসায়।
তুই এখানে? পয়সার আশায়।
থাকতে পারে? থাকতে যে হয়।
কিছু হয়ে গেলে? দেখায়েন না ভয়।
খাইছস কিছু? ফুল বেচি নাই।
কেন বেচলি না? কেউ কেনে নাই।
কয় টাকা দাম? একটা ১০ টেকা।
সব গুলা কত? একশ টেকা।
ফুল গুলি সব কিনে নেয় দীপু। তবে এখানেই শেষ নয়, ফুলওয়ালীর বাড়ি পর্যন্ত চলে যায়। ঠিক বাড়ি বলা যায় না, রাস্তার পাশে নোংরা একটা ডাস্টবিনের পাশে পলিথিনে মোড়া একটা ছাপড়া। সেখানে আশে পাশের কিছু বাচ্চাদের সাথে খেলছিল ফুলওয়ালীর ভাই। ও নিজেই একটা বাচ্চা, তারওপর এই ছোট ভাই, কিভাবে সম্ভব তাই ভাবে দীপু৷ ওদের জন্য কিছু খাবার আনে দীপু। খাবার গুলি খেয়ে নেয় ওরা। হঠাৎ ছোট ভাইটা বলে ওঠে,
ভোট আছে ভাই? না রে সোনা।
খাইতে দিলেন? দিতে মানা?
মিছিল করুম? আরে না রে।
ছবি তুলবেন? কে তোলে রে?
ওই যে সাহেব? চিনিস তাকে?
না চিনি না। কোথায় থাকে?
কি জানি ভাই? কি করে সে?
ছবি তুলে। হঠাৎ এসে?
আর কোন কথা বলে না ছোট্ট ছেলেটা। খাওয়ায় ব্যাস্ততা দেখায়। দীপু ভাবতে থাকে ওইসব নেতাদের কথা যারা শুধু ভোটের সময় খোজ নেয় এইসব বাচ্চাগুলোর, আর বাকি দিনগুলি ফিরেও দেখে না। যাইহোক, সে ভাবনা ছেড়ে ও ফুলওয়ালী কে আরও কিছু শুকনা খাবার কিনে দিয়ে আসে। বাচ্চাগুলি দু তিন দিন হয়তো খেতে পারবে। চলে আসে তারপর। একটা দীর্ঘশ্বাসে বাতাস কিছুটা ভারী হয়।