তখন বছর ছয়েক
মায়ের মেয়ে হওয়ায়
মাকে হত্যা করে বাবা হয়েছিল
আত্মঘাতী ।
মাকে দাহ করা হয়েছিল যে শ্মশানে
সেখানে ফিরে গিয়েছি কত
শুধু মাকে পেতে ।
প্রথম প্রথম দাদু-ঠাম্মা আদর করতো।
পাড়ার লোক বলতো-আহারে!
দাদু-ঠাম্মা কাকার ছেলের হলো ।
আর আমি রইলাম,
বাবার খড়ের ছাবড়ার নিচে ।
সমবয়সীরা স্কুলে যেত
আমার মন টানতো। তবুও .....
.
নন্দী বাড়ীর মায়েরা ছেলে-মেয়েদের
কপালে বড়ো কাজলের টিপ,স্নো মাখিয়ে
তুলসীপাতা, নখ দাঁতে কেটে পাঠাতেন বাড়ীর বাইরে ।
আর আমার?
জীবনটাই কেটে গেল শুধু বাইরে ।
তারিয়ে দিত,ভাত খাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে থাকলে।
ওদের নাকি বদ হজম হবে!
পটল তুলে, ঝাল তুলে যখন টাকা
কাকিমার হাতে দিতাম -
ক'টা দিন খেতে পেতাম ।
দিন যায়,রাত কেটে ভোর হয়
বুকে আছড়ে পড়ে যৌবনের ঢেউ
অনেকে হাত বুলাতে চায়
বলে আ-হা-রে!
শীতকালে যখন ধুলোয়
আমার মুখ-পা ফেঁটে যেত-
তখনও কেউ বিছানায় ডাকেনি!
ভালোই হয়েছে,
মায়ের কাছে চলে যাওয়ায়
মেয়েকে সইতে হয়নি অপমান, অবঞ্জা ইত্যাদি ....
বিশু কাকাই একমাত্র লক্ষ রাখতো আমাকে
তখন ষোলো কি সতেরো!
আমাকে নিয়ে এসেছিল-
ভালো খেতে দেবে,বিয়ে দেবে ভালো সংসারে ।
আমার আর ফেরা হয়নি ।
এ সমাজ-সংসার শুধু খাদ্য-খাদকের
একদিন খিদের জন্য
দাঁড়িয়েছি বাড়ীর সামনে,
দাঁড়িয়েছি মুখের আগে
আজ সকলে আসে আমার কাছে
শুধুমাত্র খাদ্য পেতে।