নিশীথ রাতে শিশির ঝরে ধানের ক্ষেতে ধীরে,
ফাল্গুন এল, রোদের আঁচল দোলে পথের ধারে।
মাঠের কোণে হলুদ ছড়িয়ে সরিষা হাসে মেতে,
বাতাস যেন মিষ্টি গন্ধ ছড়ায় রাঙা ক্ষেতে।

দখিন হাওয়ায় পলাশ দোলে রক্তিম আবির মেখে,
আমের মুকুল মধুর স্বপন জাগায় আঁখির ঢেকে।
শিমুলের ডালে পাখির মেলা, গানে ভরে বন,
তালগাছগুলো দুলে ওঠে, বাজায় ছন্দ-মন্ত্রণ।

বটের ছায়ায় কিশোর কিশোরী খেলে লুকোচুরি,
মাঠের পরে বাজে বাউলের একলা বেহাগ সুরী।
গরুর গাড়ির চাকা বেয়ে ধুলো উড়ে পথের বাঁকে,
বিকেল বেলায় ঢুলে পড়ে গাঁয়ের ঘুমঘোর ডাকে।

বৃদ্ধ বটের ছায়ায় বসে বুড়ো হাঁকে গান,
"এই যে জীবন, এই যে রোদ, ফাল্গুন আপন প্রাণ!"
পুকুর ধারে কোকিল ডাকে, কাঁপে ছায়ার রেখা,
গাঁয়ের পথে বয়ে চলে দিনের রঙিন রথিকা।

দুপুর শেষে সোনার আলো ঝিমিয়ে নামে ধীরে,
শঙ্খচিল যায় আকাশ ছুঁয়ে গোধূলিরই নীড়ে।
ফাল্গুন যেন রঙের পরশ, প্রাণের উচ্ছ্বাস,
গ্রামের বুকে রোদ্দুর মেখে রেখে যায় বিশ্বাস।