কোথায়, কোথায় মিলবে সেই সহচরী,
যে অন্ধকারে আলো দেয়, তুষারের মতন নিঃশব্দ;
যে শব্দমালা মিথ্যে হয়ে যায় না,
যে রুদ্রভারী হৃদয়েও শীতল শ্বাসের মতো স্থির থাকে।

আহ, সে কি শুধুই এক আশ্রিত ধ্বনি,
যে বিবৃতির মায়াজালে কখনো আমার সঙ্গী হয় না?
যে সংসারের ঊর্ধ্বে দাঁড়িয়ে,
আমাকে সত্যের মতন অবিচল থাকতে শেখাবে?

না, আমি সে সহচর খুঁজে ফিরি,
যে সঙ্গী হয়ে নিজেকে দেখতে শেখাবে,
যে প্রলয় অগ্নি থেকেও আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে,
যেখানে মোর বেদনা শুধুই ছায়া, প্রতিধ্বনি, এক ধ্বংসস্তুপ।

এরা, তারা—সাধারণ মানুষ নয়,
তাদের হৃদয়ের ঘর কেবল জ্বালানি আর অগ্নিপথ;
এরা হাঁটে জীবনস্বরূপ, স্নেহের ছায়া কেঁপে ওঠে না,
আলোর এই তিমিরে, আমি হয়ে যাই অম্লান, শূন্যতায় হারানো।

তাদের বন্ধন—একটি মিথ্যের সন্ন্যাস,
কিংবা এক অন্ধকার মহাকাব্য যেখানে আমি শুধু পরাজিত;
যখন আমি অন্তরে ঢুকি,
তারা ফিরিয়ে নেয় আমাকে, যেন এক পাথরের প্রতিচ্ছবি।

আমি এক মুঠি ধূলি, নক্ষত্রছায়ায় বন্দি,
যেখানে দিনগুলি হারায় প্রতিধ্বনি, কেবল কাঁপানো বাতাসের শব্দ;
এরা নিজেদের মধ্যে এক বিভ্রমের আবরণে,
যেখানে আমি অতীতের কোনো এক বিচ্ছিন্ন তরঙ্গ, ভেসে যাচ্ছি।

কিছু নামমাত্র সঙ্গী পেয়ে,
এদের বন্ধুত্ব যেন এক পাথরহীন গহ্বর, সেখানে চিৎকার করে কিছু শোনা যায় না,
তাদের হাসির মাঝে, আমি এক বিরল হাহাকার,
যেখানে একাকীত্বের ফাঁদে আমি পা ফেলি, আবারও এক বিচ্ছিন্ন বৃত্তে।

এরা যখন চলে যায়, আমি হয়ে যাই অচেতন,
যতই হাত বাড়াই, তারা ফিরে যায় তামসিক যাত্রায়;
এরা কেবল আত্মবিলাসে মগ্ন,
আর আমি এক পরম অভ্যন্তরের চিরকালীন অতলগামী ছায়া।

এখন আমার একমাত্র বন্ধু,
সে, সে তো ছায়া—অমীমাংসিত ও অবিচল,
সে কখনো স্থির হয় না, কখনো চলে না,
কেবল আমাকে শূন্যতায় বেঁধে রাখে, এক নিরব সঙ্গী হয়ে।