তবে আর দেরি কিসে!
এসে পড় মোর ছোট্ট গ্রামটিকে ভালোবেসে।
দেখাব তোমায় নারিকেল গাছে শালিকের বাসা
খেজুর পাতায় আবছা কুয়াশা,
দেখাব তোমায় ঐ দুর আকাশ
আরও দেখাব শিশিরে ভেজা দূর্বা ঘাস।
দেখাব তোমায় প্রভাতে তালপাতার ফাঁকে রবিদার উঁকি মারা,
শিশু কেমন করে কেঁদে উঠে সাতসক্কালে মাতৃস্নেহ  ছাড়া!

দেখবে?
আরও দেখবে?
তবে দেখো, এই গোয়াল ঘরখানি
উপরে নেই ছাউনি বর্ষায় পড়ে পানি
ভোর বেলাতেই বাড়ির মহিলারা সব গোয়ালিনী।
এসো এ দিকে দেখো বা দিকে
বিশাল ধানক্ষেত আর রাশি রাশি ধান,
আরেহ ঐ দেখো ঐ দেখো
দাদাভাই চিবুচ্ছে খর দিয়ে পান!

আজ দেখাব তোমায় দিঘির পাড়ের মস্ত বড় তেঁতুল গাছখানি
আজ শোনাব তোমায় তেঁতুল গাছে থাকা এক শাকচুন্নির কাহিনী;
একদা এক ইংরেজের ঘাড় মটকেছিল
বলেছিল মোরে মোর নানি।

এসো খাওয়াব তোমায় মায়ের হাতে বানানো শীতের পিঠা পুলি
এই দেখো,
ছোট্ট বোন ছুমাইয়ার তৈরী জোলাভাত খাওয়ার চুল্লি।
খাবে কি ভিজিয়ে রুটি পিঠা রাজহাঁসের ঝোলে?
অনেক স্বাদ আছে পান্তা আর ভাজা ইঁলিশে।

বৈকালে তোমায় নিয়ে যাব গ্রামের  হাটে
হাটে মেলবে বহু লোক বটে।
দেখবে সেথায় সাপের খেলা
শুনবে জারি গান,
যে গানে তোমার জুড়িয়ে যাবে প্রাণ।
হাটের শেষে রওয়ানা দিব মোরা বাড়ির উদ্দেশ্যে গ্রামের পথ ধরে_
টর্চলাইট জ্বালাব, হাতে হাত রেখে পথ চালাব,
হারিয়ে যেন না যাই মোরা গুটগুটে এই আঁধারে।

রাত্রি বেলা খাওয়া শেষে ঘুমায় পাশাপাশি নানা আর নানি,
ভালো লাগে ভোর রাত্রিতে শীতের প্রোকোপে দুজনের কাঁথা টানাটানি।
প্রত্যেক সকাল বেলায় জানাব তোমায় সুপ্রভাত
এভাবেই তোমার সাথে কেঁটে যাবে কয়েকটা দিন ও রাত।
ভালো থেকো সুখে থেকো এই বলে বিদায় বেলা জানাব তোমায় প্রীতি,
চলে যাবে তুমি
আর আগের মত একা হয়ে যাব আমি।
তোমার সাথে কাটানো সকাল-বৈকাল
একসাথে দেখা চাঁদ আর রাত হয়ে যাবে সব স্মৃতি!