সেদিন নাকি রিকশা থেকে নেমে সোজা বাড়ীর দিকে চলে যাই
রিকশাওয়ালা হা করে তাকিয়ে ছিলো।
খানিকবাদে পাঁচ-ছয় মানুষ নিয়ে ঘরে হাজির,
অত:পর অপরাধী সাবস্থ্য করে ভাড়া আর মানসম্মান নিয়ে চলে গেল সে।
আমি কেবল অবাক হয়ে রইলাম।

প্রাকৃতিক কাজ সারাতে প্রক্ষালন কক্ষে সব খুলে বসে আছি
ছিটকিনির কথা মাথায় ছিল না মোটেও
একটুপর এক সহকর্মী এসে দরজা খুলে আমার ইজ্জ্বত-সম্মান সব খুলে দিলো
যতটুকু না দেখেছিলে তার সাথে আরো কিছু মশলা মিশিয়ে
সারা অফিস পাড়া আমার সম্মান নষ্ট করার বিজ্ঞাপন করে দিলো।

অনেকদিন হয়ে গেল মার ওষুধটা আর কেনা হলো না-
অথচ প্রতিদিন ফার্মেসীর সামনে দিয়ে আসা-যাওয়া করি।
আমার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল
অবহেলায় ভেবে মা আর ওষুধ নেয় না।

অফিসের মিটিং-এ বসেছিলাম তারপর আর কিছু মনে নেই
হঠাৎ মহা-ব্যবস্থাপকের চিৎকারে ঘোর ভাঙ্গে-
ভয় কাটাতে বুকে থুথু দিলাম আর বুঝলাম ঝড়টা আমার উপর ছিল।
তপন স্যারের’ মত মহা-ব্যবস্থাপকও প্রশ্ন করে বসলে-
আমি একটু আগে কি বলছি বলেন তো?
প্রায়ই ২৫৫৫ দিন পর ওনার আমাকে অপদার্থ, অকর্মা মনে হলো;
চাকরি মনে হয় চলে যাবে!

কারো মৃত্যুতে আমার চোখে জল নামে না,
কারো জন্মে আমি আনন্দিত-উচ্ছসিত হই না।
কোথায় কি হচ্ছে, কি ঘটছে চারপাশে;
আমি কোন খবরে থাকি না।
কেউ কেউ অসামাজিক বলে, কেউ বলে বন্য
আমার কোন বন্ধু নেই, ছিল কিনা কেউ- কে জানে?
প্রচন্ড বিরক্ত সবাই- কেউ কাছে আসে না
পাগল বলে ভয়ে কেউ পাশে থাকে না।

আমার সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে
সবকিছু কেমন গুলিয়ে ফেলছি।

রোগের কাছে, শোকের কাছে পরাজিত
তবুও মনের কাছে আজও আছো জেগে
সব-ছেড়েছি তোমার কথা ছাড়িনি
সব ভুলেছি-তোমার পথ ভুলিনি
আমি তোমাকে ভুলিনি, আজোও একফোটাও ভুলিনি;
যদি পরীক্ষা দিতে হয় অনায়েসে পাস করে যাবো।
বলে দিতে পারি প্রথম দিনের কথা
হিসেব ছাড়া বলে দিতে পারি কত হাজার চুম্বন একেঁছিলাম তোমার ঐ ঠোঁটে
কত জোছনার মাখামাখিতে রাত হয়েছে ভোর সবই জানা
কতবার তোমার চুলের ঘ্রাণে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম মনে আছে
কত শত গানে মুগ্ধতা আবেশ ভরেছিলে তার হিসেব বরাবরই আছে।
মনে আছে সন্তানদের নামের কথা, মনে আছে সব স্বপ্ন।

তুমি চলে গেলে কবে-তবুও তোমায় ভুলিনি, সাথে রেখেছি ছাড়িনি
ডিমেনশিয়া ভুগছি- ভুলে যাওয়া রোগ তবুও তোমায় ভুলাতে পারে নি।