বিসর্জন চাই না
হে দেবী, দূর্গা তুমি অসুর বধিলে
নিজ হাতে, এলে শান্তির বার্তা নিয়ে
সুধালে, মানুষের চেয়ে কে মহিয়ান
ঈশ্বরের সেরা সৃষ্টি মানুষ তার প্রমাণ
সেবিলে মানব সেই সেবা পায় ঈশ্বর।
হে মহাদেবী, দূর্গতিনাসিনী
স্বরসতী-লক্ষী-গনেশ সুন্দর অতি
অপরূপ রূপিনি মহা স্বেতা
দুষ্টের দমন, সৃষ্টের রক্ষাকারিনি
হে দূর্গাদেবী, মহারানী হে নারী
তোমার বন্দনা করে ভক্ত সবাই
তোমার রূপ-গুন একটু যদি পাই।
আমরা তো নই পন্ডিত ভ্রহ্মচারী
আমরা পারি না হতে মাতা-কুমারী
আমরা সবাই পাপী-তাপী-পূঁজারী
পূঁজার অর্ঘ্য হাতে তোমার পদতলে
নত শীরে ক্ষমা প্রার্থী অপকর্ম হলে
তুমি তো ক্ষমা করবেই বিশ্বাস বলে
তুমি যেমনটি কর এবারও করবে কৃপা হলে।
তুমি নির্বাক! তোমার অবয়ব কথা কয়
আমরা স্বার্থক হতে চাই বুঝে ইশারা
সব হারিয়ে সর্বশান্ত আমরা যে দিশেহারা
তুমি দিবে আমাদের পথের দিশা
মুছে দুরাশার হাতছানি দিবে আশা
দিয়ে ঠাঁই তোমার আঁচল তলে, পদতলে
না দিলে ঠাঁই কোথায় যাব মোরা ভক্ত-কূলে!
তুমি যে দূর্গা ‘মা’ তুমি যাবে না
তুমি যেতে পার না তোমার সন্তান ফেলে।
হে দেবী, তোমার ডাগর চোখের তারা
অপলক নেত্র, দেখলে হই ভয়ে জড়সড়
তুমি তো সবই দেখ, যত কৃর্তি-অপকৃর্তি
আমাদের আকুলি-বিকুলি শত মিনতি
ক্ষমা নিশ্চিত ভক্তরা মাগে আঁচল পাতি
তুমি থাক যে ক’টা দিন অবয়বে আকারে
নিরাকারেও তুমি রবে কোটি ভক্তের অন্তরে।
হে দেবী, কামনা-বাসনা পূরণকারিনি
ভূবন মোহিনী, অনন্ত যৌবনা রূপিনী
তোমার রূপের পরশে ভক্তরা হতে চায়
রূপবতী, রূপবান, যেন নদীতে প্লাবণ, বান;
সবুজে ভরা মাঠে ফলে সোনালী ধান
ভরে যায় সকল কৃষক-কৃষাণীর প্রান
আনন্দে হয় মাতোয়ারা নাচে নৃত্য-তালে
পূঁজা মন্ডপে সব মান অভিমান ভুলে
সুরের মূর্ছনায় ঝংকারে ঝংকারে
করে কীর্তন, নাচন, দোলে দোলে
চায় না কিছু, শুধু তোমার কৃপা পারে বলে।
তোমায় দেখে মরি মরি কি যে রূপের মাধুরী
শোভা পায় যে হাতে তোমার বাশের বাঁশরী
ভয়ংকর! সে হাতে আবার খোলা তরবারী
তুমি চোখের জলে ভাস, আবার কখনো হাস
কাঁদিয়ে সকলে তুমি যাও আবার বিষর্জনে
আবার আসবে বলে দিয়ে হাতছানি
দশমী হাসায় দশমী কাঁদায় ভুলা যায় না
প্রতিদিন হউক দশমী, তবুও বিষর্জন চাই না।
হে রূপের দেবী, গুনের দেবী, শক্তির দেবী
তোমায় নিয়ে কত শত রচনা করে কবি
তোমাকে দেখবে আশায় ভোরে উঠে রবি
রবির কিরণে হয় উজ্জল তোমার ছবি
চাঁদের জোৎস্নায় পূঁজা মন্ডপ আলোকিত
আকাশের সব তারা হাসে হয়ে পুলকিত।
মোঃ আতাউর রহমান
টরন্টো, কানাডা
১১/১০/২০১৫ ইং